সোমবার, ৩ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিদেশে অর্থ পাচার

দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিন

দুনিয়ার যে সব দেশ থেকে বিদেশে ব্যাপক মাত্রায় অর্থ পাচার হয়, সে তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশের নাম। পিলে চমকানো তথ্য হলো সুইস ব্যাংকে জমাকৃত বাংলাদেশিদের টাকা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। গত এক বছরে বাংলাদেশিদের অ্যাকাউন্টে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা জমা হয়েছে। দুই মাস আগে দৃশ্যত পিলে চমকানো তথ্য তুলে ধরা হয় ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) প্রতিবেদনে। এতে বলা হয় বাংলাদেশ থেকে গত এক দশকে বিভিন্ন দেশে চার লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। গত ১ মে উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে অর্থ পাচার : ২০০৫-২০১৪ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু ২০১৪ সালেই বাংলাদেশ থেকে মোট বৈদেশিক বাণিজ্যের ৯ থেকে ১৩ শতাংশ অর্থ পাচার হয়েছে টাকার হিসাবে যার পরিমাণ ৪৬ হাজার কোটি থেকে ৭২ হাজার কোটি টাকা। সংস্থাটির মতে, বাংলাদেশ থেকে এ সময়ে শুধু বাইরেই অর্থ পাচার হয়নি, বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৩৪ থেকে ৬১ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশে পাচার হয়ে এসেছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের অর্থ পাচার সংক্রান্ত শীর্ষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর যে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে তার একটা বড় মাধ্যম হুন্ডি। এর বাইরে বিদেশে টাকা পাচার হচ্ছে ব্যবসার নামে। দেশ থেকে বৈধভাবে টাকা পাঠানোর কোনো পদ্ধতি না থাকায় অবৈধ পথেই টাকা পাচার হয়, আর পাচার হওয়া এই টাকা রাখা হচ্ছে বিভিন্ন দেশের ব্যাংকে। অন্য দেশের নাগরিকত্ব নিতেও বিনিয়োগ করা হচ্ছে পাচারের টাকা। গার্মেন্ট ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা, সরকারের সাবেক এবং বর্তমান আমলা, বিভিন্ন ব্যবসায়ী গ্রুপ এই টাকা পাচারের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। অথচ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে না। দেশ থেকে প্রতিবছর যেমন বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে, তেমনি বিদেশ থেকেও অননুমোদিত পথে আসছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। অর্থ পাচারের এ ধারা দেশের অর্থনীতির জন্য বিসংবাদ সৃষ্টি করছে। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থেই অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে সরকারকে কড়া হতে হবে। পাচারকারীদের বিরুদ্ধে গড়ে তুলতে হবে আইনি প্রতিরোধসহ কার্যকর ব্যবস্থা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর