বুধবার, ৫ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

বয়লার দুর্ঘটনা

এমন মৃত্যু কাম্য নয়

গাজীপুরে গত সোমবার সন্ধ্যায় পোশাক কারখানার বয়লার বিস্ফোরণে অন্তত ১০ জন প্রাণ হারিয়েছে। আহতের সংখ্যা অর্ধশত। বয়লার বিস্ফোরণে প্রাণহানি একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বিশেষত চালকলের বয়লারে প্রায়শই বিস্ফোরণ ঘটছে এবং প্রতিটি দুর্ঘটনা কারও না কারও মৃত্যু ডেকে আনছে। এসব দুর্ঘটনায় যারা আহত হচ্ছে তাদের অনেককেই সারা জীবন পঙ্গুত্বের অভিশাপে ভুগতে হচ্ছে। সোমবার গাজীপুরের কাশিমপুরের নয়াপাড়ায় যে পোশাক কারখানায় দুর্ঘটনাটি ঘটে সেখানকার বয়লার সংস্কার কাজ চলছিল। বিস্ফোরণে কারখানায় আগুন ধরে যায় এবং চারতলা ভবনের দোতলা পর্যন্ত একাংশ ধসে পড়ে। ধসে পড়া কক্ষগুলোতে কাঁচামাল ও মেশিনপত্র থাকায় এবং সন্ধ্যায় কারখানা ছুটি হওয়ায় ভিতরে খুব বেশি কর্মী ছিলেন না। ফলে হতাহতের সংখ্যা সীমিত থাকে। চালকল ও পোশাক কারখানার বয়লারে বিস্ফোরণ প্রায়শই ঘটছে এবং সঙ্গত কারণেই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে যারা কর্মরত তাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এ ধরনের প্রতিটি দুর্ঘটনার পর কারণ উদঘাটনে তদন্ত কমিটিও গঠিত হচ্ছে। কিন্তু দুর্ঘটনা এড়ানোর পথ বাতলে দেওয়া কিংবা সতর্কতা অবলম্বনের কোনো চেষ্টাই লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। প্রতিটি দুর্ঘটনায় যারা হতাহত হচ্ছে তাদের প্রায় সবাই শ্রমিক। উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ থেকেও তারা বঞ্চিত হচ্ছে। যাদের অবহেলায় এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে তাদের জবাবদিহিতার মধ্যে আনার প্রক্রিয়াও অনুপস্থিত। দেশের চালকল এবং পোশাক শিল্পসহ যেসব শিল্প কারখানায় বয়লারের ব্যবহার রয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের নিরাপত্তার স্বার্থে কীভাবে বয়লার সংক্রান্ত দুর্ঘটনা এড়ানো যায় সে বিষয়ে উদ্যোগী হতে হবে। আমরা আশা করব গাজীপুরের পোশাক কারখানার বয়লার দুর্ঘটনায় যারা হতাহত হয়েছেন তাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হবে।  আহতদের চিকিৎসার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে এমনটিও কাম্য।  দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট যথাসময়ে প্রকাশ করা হবে এমনটিও প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর