বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

লিবিয়ায় অপহরণ বাণিজ্য

অপরাধীদের আইনের আওতায় আনুন

গৃহযুদ্ধ কবলিত আফ্রোকীয় আরব দেশ লিবিয়া এখন মানুষ অপহরণের ফাঁদ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মোটা অঙ্কের বেতন ও সুযোগ-সুবিধার প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশিদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এক সময়ের সমৃদ্ধ এই দেশটিতে। তারপর তাদের আটকিয়ে নির্যাতন চালিয়ে স্বজনদের কাছে ফোন করে মুক্তিপণ চাওয়া হচ্ছে। যারা অপহরণকারীদের দাবি অনুযায়ী মুক্তিপণ দিতে পারছে তারা মুক্তি পাচ্ছে বন্দীদশা থেকে। যারা মুক্তিপণ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে করুণ পরিণতি। অপহরণ চক্রের সঙ্গে বেশ কিছু বাংলাদেশি জড়িত। তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও সহায়তা করছে লিবীয় সহযোগীরা। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে এ ধরনের অন্তত ছয়টি ঘটনার অভিযোগ এসেছে যে সব জিম্মি হিসেবে আটক রাখার ঘটনার শিকারদের মধ্যে চারজনকে উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। স্মর্তব্য, গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর লিবিয়াতে যান জামালপুরের ব্যবসায়ী ফজলুল হক। সেখানে তিনি অপহরণের শিকার হন। তার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায় অপহরণকারী চক্রের সদস্য নোয়াখালীর আবদুর রাজ্জাক। পরে মোবাইল ফোনে ফজলুর পরিবারের কাছে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। অপহরণকারী চক্রের সদস্য মোয়াজ্জেম ও তালেবকে রাজধানীর বাসাবো থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরে ফজলু অপহরণকারীদের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে লিবিয়া থেকে সম্প্রতি ঢাকায় ফেরেন। নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার খাজুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা জহিরও একইভাবে অপহরণের শিকার হন। গত বছরের অক্টোবরে স্পেনের কথা বলে পাচারকারীরা তাকে লিবিয়াতে পাঠায়। সেখানে পৌঁছানোর পর শামসু নামের একজন জহিরকে আটকে রেখে। মুক্তিপণ হিসেবে তার পরিবারের কাছে ছয় লাখ টাকা দাবি করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযোগ পাওয়ার পর জহিরকে লিবিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে উদ্ধার করে। বিদেশে বাংলাদেশিদের অপরাধে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা দেশের সুনামের জন্য বিড়ম্বনা ডেকে আনছে। অপরাধীদের একাংশ মানব পাচার বিশেষত প্রবাসীদের জিম্মি করে তাদের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের যে ঘৃণ্য ব্যবসা চালাচ্ছে তা শিউরে ওঠার মতো। আমরা আশা করব এ ধরনের অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আরও তত্পর হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর