বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

মুক্তিযুদ্ধের শব্দসৈনিক

স্বীকৃতিদানের সিদ্ধান্ত অভিনন্দনযোগ্য

মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ৫৮ জন শব্দসৈনিককে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দান করেছে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়। স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিকরা কাঙ্ক্ষিত মর্যাদা পেলেন। গত মঙ্গলবার মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় এ সম্পর্কিত একটি গেজেট প্রকাশ করেছে। যাতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের বহুল আলোচিত সাড়া জাগানো অনুষ্ঠান চরমপত্রের উপস্থাপক এম আর আখতার মুকুল, সংগীত শিল্পী ফকির আলমগীর, তিমির নন্দী এবং চলচ্চিত্রকার সুভাষ দত্তসহ ৫৮ জন শব্দসৈনিককে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত বছরের নভেম্বরে ১০৮ জন শব্দসৈনিককে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া হয়। স্মর্তব্য, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ৪৪তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধে বিশিষ্ট ভূমিকা পালনকারী ৫৮ জন শব্দসৈনিককে মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র এবং সাংস্কৃতিক কর্মীদের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। বলা যায় মুক্তিযুদ্ধে জাতিকে অনুপ্রেরণা জোগাতে শব্দসৈনিকরা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে ১০ জন সাহসী শব্দসৈনিকের উদ্যোগে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয়। ৩০ মার্চ এ কেন্দ্র থেকেই প্রচারিত হয় জয় বাংলা বাংলার জয় সংগীত। পাকিস্তানি হানাদারদের হামলায় এ বেতার কেন্দ্রের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্তব্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে আগরতলা ও ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের কার্যক্রম চালানো হয়। বাঙালি জাতির সাহস অটুট রাখতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলোর বিশিষ্ট ভূমিকা রয়েছে। স্বাধীনতার দীর্ঘ সাড়ে চার দশক পর হলেও মুক্তিযুদ্ধে শব্দসৈনিকদের স্বীকৃতি দানের ঘটনা সরকারের একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার হিসেবে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ও গ্রহণযোগ্যতা আরও উজ্জ্বল হবে। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শব্দসৈনিকদের কেউ কেউ এখন জীবনের পরপারে। অন্যরা জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এ স্বীকৃতি পেয়েছেন। যে স্বীকৃতি অনেক আগেই কাঙ্ক্ষিত ছিল। তবে জাতি যে তাদের অবদানকে স্বীকৃতি দিয়েছে এটি অবশ্যই সবার জন্য এক স্মরণীয় ঘটনা। এ সিদ্ধান্তের জন্য মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় অবশ্যই প্রশংসা পাওয়ার দাবি রাখে।

সর্বশেষ খবর