শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

ব্যাংক লুটেরাদের ধরুন

আইন প্রয়োগকারীদের সক্রিয়তা কাম্য

দেশের ব্যাংকগুলো পরিচালক নামধারীদের লুটপাটের মৃগয়া ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। কর্তাব্যক্তিরা এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই তত্ত্বে গা ভাসিয়ে দেওয়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো পরিণত হয়েছে তলাবিহীন ঝুড়িতে। এসব ব্যাংকের অস্তিত্ব রক্ষায় প্রতিটি বাজেটে সরকারকে টাকা ঢালতে হচ্ছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর পরিচালক ও কর্তাব্যক্তিরাও খুব একটা পিছিয়ে নেই। বিশেষত নতুন প্রজন্মের ব্যাংকগুলোর পরিচালকরা লুটপাটে বেশ এগিয়ে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে সে টাকা আত্মসাৎ করছেন ব্যাংকের পরিচালকরা। এমনকি ১৮ বছর বয়সী তরুণী থেকে শুরু করে পরিচালকের কাজের লোক, আত্মীয়স্বজন, পাড়া-পড়শির নামে ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করা হচ্ছে না। ভুয়া কাগজপত্র, জাল দলিল, ভুয়া এফডিআর মর্টগেজ দেখিয়ে আবেদনকারীদের নামে বড় অঙ্কের ঋণ দেওয়া হচ্ছে। ঋণের বিপরীতে রাখা জামানতের সম্পত্তিতে সাইনবোর্ড লাগানোর নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। এভাবেই বিসমিল্লাহ গ্রুপ এবং হলমার্কের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি এখন বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেও অস্বাভাবিক ঋণ দেওয়ার প্রবণতা জেঁকে বসেছে। কোনো ধরনের বিনিয়োগ ছাড়া রাতারাতি উদ্যোক্তা বনে যাওয়া নামসর্বস্ব গ্রুপ অব কোম্পানিজের নামেও ঋণ দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। যার বেশির ভাগই পরবর্তীতে অনাদায়ী থেকে যাচ্ছে। ঋণ নেওয়ার সময় ঋণ আবেদনকারীরা ব্যাংকের পরিচালক এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মোটা অঙ্কের কমিশন দিয়ে তা বোর্ডে অনুমোদন করিয়ে নিচ্ছেন। ফলে ওই ঋণ পরিশোধে তেমন কোনো তাগিদই দেখা যায় না ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে। দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ কোটি টাকার ওপরে উন্নীত হওয়ার পেছনে ব্যাংক পরিচালক ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে লুটেরা চক্রের যোগসাজশ কাজ করেছে বলে মনে করা হয়। অতি সম্প্রতি প্রথম শ্রেণির একটি বেসরকারি ব্যাংকের ৩৪৮ কোটি টাকা ঋণ কেলেঙ্কারি ও আত্মসাতের ঘটনায় দুদক লুটেরা ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।  ব্যাংক চোরদের বিরুদ্ধে নেওয়া এ পদক্ষেপ প্রশংসার দাবিদার।  শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করেও লুটেরারা টিকে আছে বহাল তবিয়তে। এ অবস্থার অবসানে আইন প্রয়োগকারীদের সক্রিয় হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর