শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

অজ্ঞাত জ্বরে শিশুর মৃত্যু

রোগ নির্ণয়ে গবেষণার উদ্যোগ নিন

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অজ্ঞাত জ্বরে ৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে আরও প্রায় ৫০ শিশু। উপজেলার সোনাইছড়ি ত্রিপুরা পল্লীতে জ্বরে একের পর এক শিশুর মৃত্যু এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা এটিকে অজ্ঞাত ভাইরাসজনিত জ্বর বলে অভিহিত করেছেন। জ্বরে যেসব শিশু মারা গেছে তাদের বয়স তিন থেকে ১২ বছর। চিকিৎসকরা জ্বরে একের পর এক শিশুর মৃত্যুর কারণ উদঘাটনের চেষ্টা চালাচ্ছেন। বিষয়টি ঢাকার ইনস্টিটিউট অব ইপিডেমিওলজি ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাদের একটি প্রতিনিধি দল ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম পৌঁছে ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং নমুনা সংগ্রহ করে রোগ শনাক্তের চেষ্টা চালাচ্ছে। আক্রান্ত শিশুরা দুই-তিন সপ্তাহ ধরে প্রচণ্ড জ্বরে ভুগছে। জ্বরের সঙ্গে কাশির পাশাপাশি শরীরে ছোট ছোট গোটা বিচির মতো উঠছে। যেসব শিশু মারা গেছে তারা প্রচণ্ড জ্বরে কাঁপতে কাঁপতে এক সময় অজ্ঞান হয়ে যায় এবং প্রাণ হারায়। চট্টগ্রামের দুর্গম এলাকায় পাহাড়ি শিশুদের মধ্যে অজ্ঞাত রোগের প্রাদুর্ভাব একটি উদ্বেগজনক বিষয়। এ ধরনের রোগ নিকট অতীতে সীতাকুণ্ড বা ধারেকাছের এলাকায় দেখা যায়নি। সীতাকুণ্ডের ত্রিপুরা উপজাতির শিশুদের মধ্যে প্রাণঘাতী অজ্ঞাত জ্বর ছড়িয়ে পড়ায় তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আশার কথা, অজ্ঞাত জ্বরের প্রাদুর্ভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। উপদ্রুত এলাকার সব শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোগ উদঘাটনেও চলছে গবেষণা। সীতাকুণ্ডের ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী শিক্ষাদীক্ষা চিকিৎসাসহ নাগরিক সুযোগ-সুবিধার দিক থেকে পির্িছয়ে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় তাদের বসবাস। সাধারণত কারও কোনো অসুখ হলে তারা ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে পরিত্রাণের পথ খোঁজে। এর বাইরে কখনো কবিরাজি কিংবা হোমিওপ্যাথিতে তাদের চিকিৎসা সীমাবদ্ধ থাকে। কিন্তু অজ্ঞাত রোগে একের পর এক শিশু মৃত্যুর ঘটনা দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের গবেষণার কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের মধ্য সোনাইছড়ি পাহাড়ি এলাকা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ট্রপিক্যাল মেডিসিন ইনস্টিটিউটের প্রতিনিধিরাও হাজির হয়েছেন এ দুর্গম এলাকায়।  আমরা আশা করব, শিশুদের প্রাণ হরণকারী এ রোগ নির্ণয়ে দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা সফল হবেন এবং তারা রোগ নিরাময়ের পথও খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করবেন।  অজ্ঞাত এই রোগের অবসান না ঘটা পর্যন্ত চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা তত্পর থাকবেন এমনটিও কাম্য।

সর্বশেষ খবর