শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

সামর্থ্যবান মুসলমানের ওপর হজ ফরজ

মুফতি মুহাম্মদ আল আমিন

সামর্থ্যবান মুসলমানের ওপর হজ ফরজ

আল্লাহর হুকুম হিসেবে আমরা যেসব ইবাদত করি তা সাধারণত তিন প্রকার। ১. শারীরিক ইবাদত। যেমন নামাজ, রোজা ইত্যাদি। এখানে আর্থিক কোনো বিষয় নেই। শুধু শারীরিক পরিশ্রম রয়েছে। ২. আর্থিক ইবাদত। যেমন জাকাত আদায়। এখানে শারীরিক কোনো পরিশ্রম নেই। শুধু অর্থ ব্যয় রয়েছে। ৩. শারীরিক ও আর্থিক উভয়টি। অর্থাৎ এমন কিছু ইবাদত যাতে আর্থিক ইবাদতের সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক পরিশ্রমও জড়িত। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে হজ। এতে একদিকে যেমন অর্থ ব্যয় রয়েছে তেমনি রয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে কঠোর পরিশ্রম। হজের বিধানগুলো সুন্নত তরিকা অনুযায়ী পালন করা এতটাই কঠিন যা দুর্বল মুসলমানের পক্ষে সম্ভব হয় না। আর্থিক ও শারীরিক উভয় প্রকার ইবাদত হজের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকায় অন্যান্য ইবাদতের তুলনায় এটি অধিক গুরুত্বপূর্ণ। মহান আল্লাহর নৈকট্যলাভেরও এটি একটি কার্যকর মাধ্যম। আল কোরআনে আল্লাহতায়ালা হজের আবশ্যকতা সম্পর্কে ঘোষণা করেন, ‘মানুষের পক্ষে আল্লাহর উদ্দেশে হজ করা ফরজ, যার পথের সামর্থ্য আছে।’ (সূরা আলে ইমরান : ৯৭)। এখানে সামর্থ্য বলতে আর্থিক ও শারীরিক উভয় প্রকার সামর্থ্য বোঝানো হয়েছে। ইসলামের এ ফরজ হুকুম পালন করার জন্য যারা রওনা হয় তারা আল্লাহর মেহমান। আল্লাহর যাত্রী। হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, আমি রসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘আল্লাহর যাত্রী হলো তিন ব্যক্তি। হাজী, গাজী ও ওমরাকারী।’ (বায়হাকি, নাসায়ি)। এমনকি তারা যদি এ কাজ করার সংকল্প করে ঘর থেকে বের হওয়ার পর ইন্তেকাল করে তবু সেই সওয়াব পেয়ে যাবে। বিখ্যাত হাদিসবিশারদ সাহাবি হজরত আবু হোরায়রা (রা.) আরও বলেন, রসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি হজ, ওমরা অথবা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের উদ্দেশ্যে বের হয়েছে, অতঃপর সে পথিমধ্যে মারা গেছে, তার জন্য হাজী, গাজী অথবা ওমরাকারীর সওয়াব লেখা হবে।’ (মিশকাত)। আর যদি হজ করে ফিরে আসে তাহলে নিষ্পাপ হয়ে ফিরে আসবে। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ করেছে এবং তাতে অশ্লীল কথা বলেনি বা অশ্লীল কোনো কাজ করেনি, সে হজ থেকে (গুনা থেকে মুক্ত হয়ে) ফিরবে সেদিনের মতো যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছিল।’ (বুখারি, মুসলিম)। অর্থাৎ সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে তার যেমন কোনো গুনা থাকে না তেমনি হজ সম্পন্নকারী ব্যক্তিরও কোনো গুনা থাকে না।

লেখক : খতিব, সমিতি বাজার মসজিদ, নাখালপাড়া, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর