শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

হজের ফাজায়েল ও হাজীদের করণীয়

মাও. মুফতি ওলিউল্লাহ পাটোয়ারী

হজের ফাজায়েল ও হাজীদের করণীয়

হজের ফজিলত : হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত— রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে হজ গুনাহ এবং খারাবি থেকে পবিত্র হয়, জান্নাতই হলো তার পুরস্কার (বোখারি ও মুসলিম)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হজ করে এবং হজের প্রাক্কালে অশ্লীল কথা ও কাজ এবং পাপ থেকে বিরত থাকে সে মায়ের পেট থেকে জন্মগ্রহণের দিনের ন্যায় নিষ্পাপ হয়ে ফিরে আসে (বোখারি ও মুসলিম)।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, একাধারে হজ ও ওমরাহ করতে থাক। এটা পাপ ও দরিদ্রতাকে এমনভাবে মিটিয়ে দেয়, যেমন আগুন লোহার ময়লা দূর করে দেয়। (তিরমিজি ও নাসায়ি) ওমরার ফজিলত : হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, এক ওমরার পর আরেক ওমরা করলে দুই ওমরার মধ্যবর্তী সব গুনাহ মোচন হয়ে যায়। (বোখারি ও মুসলিম) হজরত বারা ইবনে আজিব (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, রমজানে একটা ওমরাহ একটা হজের সমতুল্য। (বোখারি ও মুসলিম)

কাদের ওপর হজ ফরজ : যার কাছে মক্কা শরিফ থেকে হজ করে ফিরে আসা পর্যন্ত পরিবারের আবশ্যকীয় খরচ ছাড়া মক্কা শরিফে যাতায়াতের মোটামুটি খরচ পরিমাণ অর্থ রয়েছে তার ওপর হজ ফরজ। ব্যবসায়িক পণ্য এবং প্রয়োজনে অতিরিক্ত জমি ও বাড়ির মূল্য এ অর্থের হিসাবে গণ্য করতে হবে। মেয়েলোকের জন্য নিজ স্বামী বা কোনো বিশ্বস্ত পুরুষ ব্যতীত হজে যাওয়া দুরস্ত নয়। শুধু মাহরাম মহিলা সঙ্গে থাকলে যথেষ্ট নয়, যদিও সেই মাহরাম মহিলার সঙ্গে মাহরাম পুরুষ থাকে। অন্ধের ওপর হজ ফরজ নয়। যত সম্পদই থাকুক না কেন। নাবালেগের ওপর হজ ফরজ হয় না। নাবালেগ অবস্থায় হজ করলেও বালেগ হওয়ার পর সম্ভব হলে পুনরায় হজ করতে হবে। হাজীদের প্রাথমিক করণীয় : নিয়ত খালেছ করে নেবেন। অর্থাৎ একমাত্র আল্লাহকে রাজি-খুশি করার নিয়ত রাখবেন। নাম-শোহরাত, দেশ ভ্রমণ, আবহাওয়া পরিবর্তন, হাজী উপাধি ইত্যাদি নিয়ত রাখবেন না। খাঁটি অন্তরে তওবা করতে হবে। সফর থেকে ফিরে আসা পর্যন্ত সময়ের জন্য পরিবার ও অধীনস্তদের প্রয়োজনীয় খরচাদির ব্যবস্থা করে যেতে হবে। কোনো ঋণ নগদ আদায় করার থাকলে পাওনাদারের অনুমতি গ্রহণ করতে হবে।  তার অনুমতি ব্যতীত হজে গমন করা মাকরুহ। নিজের কাছে কারও থেকে ধার করা জিনিস বা কারও আমানত থাকলে তা মালিককে বুঝিয়ে দিয়ে যাওয়া অপরিহার্য।

লেখক : খতিব, বাইতুন নূর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, দক্ষিণ পীরেরবাগ,

ওলি মার্কেট, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর