রবিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
ইতিহাস

হজরত মুহাম্মদ (সা.)

দুনিয়ার বুকে আল্লাহর প্রেরিত সব নবী ও রসুলদের মধ্যে হজরত মুহাম্মদ (সা.) একমাত্র ব্যক্তি যার জীবনের প্রত্যেকটি খুঁটিনাটি ঘটনা ইতিহাসের অন্তর্গত হয়ে রয়েছে। তিনি ছিলেন এতিম হিসেবে সবার স্নেহের পাত্র, স্বামী হিসেবে প্রেমময়, পিতা হিসেবে স্নেহশীল ও বন্ধু হিসেবে বিশ্বস্ত। একাধারে তিনি ছিলেন সফল ব্যবসায়ী, দূরদর্শী সংস্কারক, বীর যোদ্ধা, নিপুণ সেনানায়ক, নিরপেক্ষ বিচারক, মহৎ রাজনীতিক এবং মানব জাতির জন্য সর্বোত্তম আদর্শ। তিনি সর্বক্ষেত্রে সততা, ব্যক্তিত্ব ও অপূর্ব সাফল্য সহকারে তার কর্তব্য সম্পাদন করেছেন। সব ক্ষেত্রেই তিনি সংস্কারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন এবং সব ক্ষেত্রে তিনি যথোপযুক্ত সংস্কার সাধন করে সমাজকে কলুষমুক্ত করেছেন।

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে ‘বিশ্বনবী’ রচয়িতা গোলাম মোস্তফা বলেছেন, ‘তিনি আমাদের মতোই মাটির মানুষ ছিলেন— এটাও যেমন ভুল ধারণা, তিনি একজন অলৌকিক ব্যক্তি বা অতি মানুষ ছিলেন— এটাও তেমনি ভুল ধারণা। মানুষ ও অতি মানুষের তিনি ছিলেন সমন্বয়ক। এটাই তাঁর বৈশিষ্ট্য।’ তিনি আরও বলেন, ‘তিনি ছিলেন এমন মানুষ— যার ওপর অহি নাজিল হতো, আকাশ-পৃথিবীজুড়ে যার কর্মক্ষেত্র প্রসারিত ছিল, গ্রহ-নক্ষত্র যার পায়ের ভৃত্য ছিল, সর্বোপরি যিনি ছিলেন আল্লাহর প্রতিনিধি বা খলিফা। এ ব্যাপক গণ্ডির মধ্যে বিচরণশীল একজন মানুষের রূপই ছিল হজরত মুহাম্মদের।’ মানব চরিত্রের সব ধরনের মহৎ গুণের অনন্য সমন্বয়ক ছিলেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক তাঁর সম্বন্ধে বলেন, ‘হে মুহাম্মদ, নিশ্চয়ই তুমি অনুপম চরিত্রের অধিকারী।’

কোমলতা ও বজ্রকঠিন দৃঢ়তার এক অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছে তার চরিত্রে। একাধারে তিনি ফুলের মতো কোমল আবার বজ্রের মতো কঠিন। মানুষের দুঃখ-বেদনা, রক্তপাত ও হানাহানি, উত্পীড়িতের ক্রন্দনরোল তাকে বিহ্বল করেছে। মানুষের দুঃখে তিনি অশ্রুপাত করেছেন, আবার সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি কোমল হাতে ধারণ করেছেন কঠিন তরবারি। ন্যায়েব সংগ্রামে তিনি ছিলেন এক আপসহীন ব্যক্তিত্ব।

আল্লাহর প্রতি অবিচলিত ইমানের মূর্ত প্রকাশ ছিলেন হজরত মুহাম্মদ (সা.)। সুদৃঢ় ইমানই ছিল তার মহৎ চারিত্রিক গুণাবলির উৎস। তার প্রতিটি কাজে আল্লাহর নির্দেশের প্রতিফলন ছিল। কুরাইশদের হাতে তিনি অশেষ যাতনা ভোগ করেছেন, লাঞ্ছিত হয়েছেন, প্রতিকূল পরিবেশের বিরুদ্ধে তাকে সর্বক্ষণ সংগ্রাম করতে হয়েছে; কিন্তু কখনো তিনি আল্লাহর নির্দেশিত সত্য পথ থেকে বিচ্যুত হননি, বরং দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেছেন, ‘তারা যদি আমার ডান হাতে সূর্য এবং বাম হাতে চন্দ্র এনে দেয়, তথাপি আমি মহাসত্যের সেবা ও স্বীয় কর্তব্য হতে বিন্দুমাত্র বিচ্যুত হব না।’

শাকিলা জাহান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর