সোমবার, ১৭ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

মাদকের বিরুদ্ধে আঘাত হানুন

নাফ নদে মাছ ধরা বন্ধের প্রস্তাব ইতিবাচক

ইয়াবার আগ্রাসন ঠেকাতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী নাফ নদে মাছ ধরা বন্ধের কথা ভাবছে সরকার। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অচিরেই প্রস্তাব পেশ করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি পাওয়া গেলে তা কার্যকর করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চট্টগ্রামে র‌্যাব সেভেনের উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য ধ্বংস কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে দেওয়া বক্তব্যে নাফ নদে মাছ ধরা বন্ধের যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা নানা কারণে তাৎপর্যের দাবিদার। বাংলাদেশে মিয়ানমার থেকে ইয়াবাসহ যেসব মাদকদ্রব্য আসে তার সিংহভাগ আসে নাফ নদ ডিঙিয়ে। রোহিঙ্গা এবং জেলেরা মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত। নাফ নদে মাছ ধরা নিষিদ্ধ হলে নদীপথে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আসা অনেকাংশে বন্ধ হবে। পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের অবৈধ অনুপ্রবেশে বাদ সাধা সম্ভব হবে। মিয়ানমার থেকে চোরাইপথে ব্যাপক হারে ইয়াবার অনুপ্রবেশ যুব সমাজের একাংশকে সর্বনাশের পথে ঠেলে দিচ্ছে। স্থলপথে মাদক চোরাচালান অনেকাংশে ঠেকানো গেলেও জলপথের অনুপ্রবেশ ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়ছে। অনুমান করা হয় মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে মাদক চোরাচালানে রোহিঙ্গা জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো জড়িত। তারা মাদক চোরাচালানের পাশাপাশি অস্ত্র চোরাচালানে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার জন্য যা হুমকি সৃষ্টি করছে। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের সঙ্গে অসুস্থ সম্পর্ক সৃষ্টিতে উৎসাহিত করছে। নাফ নদে জেলেদের মাছ ধরা বন্ধ হলে তা আর্থিক দিক থেকে খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করবে না। কারণ নাফ নদে যারা মাছ ধরে তারা সমুদ্র এলাকায়ও মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। মাছ ধরার পাশাপাশি মাদক পাচারের মাধ্যমে বাড়তি অর্থ আয়ের লোভে অনেকে নাফ নদে মাছ ধরার ব্যাপারে উৎসাহী। এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হলে ইয়াবা চোরাচালান অন্তত ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশও হ্রাস পাবে। রোহিঙ্গা জঙ্গিদের অপতৎপরতাও অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব হবে। আমরা আশা করব মাদক আগ্রাসন শূন্য পর্যায়ে নিয়ে আসতে শুধু নাফ নদে মাছ ধরা নিষিদ্ধ নয়, ইয়াবা চোরাচালানের সঙ্গে সীমান্ত এলাকার যেসব রথী মহারথী জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। মাদক পাচারকারীদের রাজনৈতিক কানেকশনে আঘাত হানাও জরুরি।

সর্বশেষ খবর