বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

সরকারি গুদামের চাল পাচার

অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত হোক

চট্টগ্রামে সরকারি গুদাম থেকে পাচারের সময় ৭ ট্রাক ভর্তি ৩ হাজার ৯৬ বস্তা চাল আটক করেছে র‌্যাব। পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে একজন খাদ্য কর্মকর্তাসহ পাঁচ ব্যক্তিকেও আটক করেছেন তারা। প্রায় আড়াই মাসের ব্যবধানে সরকারি গুদাম থেকে চাল পাচারের এটি দ্বিতীয় ঘটনা। গত ৮ মে বরিশালের সদর উপজেলার সরকারি গুদাম থেকে চাল পাচারের সময় র‌্যাব সদস্যরা ২০ টন চাল আটক করে। হাওর এলাকার আগাম বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে চলতি বছর ধান উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ায় চাল নিয়ে শুরু হয় অসৎ ব্যবসায়ীদের চালবাজি। রাতারাতি বাজারে চালের দাম বেড়ে যায় কেজি প্রতি দশ টাকা হারে। ঠিক এমন স্পর্শকাতর অবস্থায় সরকারি গুদাম থেকে চাল পাচারের ঘটনা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ কিনা সে প্রশ্ন জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে। সরকারি গুদাম থেকে পণ্য বের করার ক্ষেত্রে একাধিক পর্যায়ের সম্মতির প্রয়োজন হয়। তারপরও কীভাবে একসঙ্গে হাজার হাজার বস্তা চাল পাচারের ঘটনা ঘটল তা একটি রহস্যজনক বিষয়। র‌্যাব সদস্যরা আটক ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে বলেছেন, পাচারের সময় সাতটি ট্রাক আটক করা সম্ভব হলেও পাঁচটি ট্রাক পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। সেগুলোর ব্যাপারে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। চট্টগ্রামের হালিশহর থানার যে সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে চাল পাচারের ঘটনা ঘটেছে, সেখানকার মজুদ মিলিয়ে দেখা হচ্ছে খাদ্য বিভাগের পক্ষ থেকে। চট্টগ্রামের সরকারি গুদাম থেকে বিপুল পরিমাণ চাল পাচারের ঘটনা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক এবং তা সরকারি খাদ্য গুদামগুলোর অব্যবস্থাপনার নজির বলে অভিহিত করা যায়। আমরা আশা করব এ অভিযোগে যাদের আটক করা হয়েছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে পাচার রহস্য উদঘাটন করা হবে। পাশাপাশি সরকারি খাদ্য গুদামে যুগ যুগ ধরে লুটেপুটে খাই মার্কা যে অকাম্য অবস্থা বিরাজ করছে তাতে বাদ সাধা হবে। চাল পাচারের সঙ্গে গ্রেফতারকৃতরা ছাড়াও আর কারা জড়িত তা উদঘাটনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমনটিও কাম্য। আড়াই মাসের ব্যবধানে সরকারি গুদাম থেকে চাল পাচারের দুটি ঘটনা ধরা পড়েছে র‌্যাব সদস্যদের হাতে। এটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এই এলিট ফোর্সের সক্ষমতার উদাহরণ। আমরা আশা করব চাল পাচারের ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তযোগ্য শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।

সর্বশেষ খবর