শনিবার, ২৯ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিদেশি প্রতারক চক্র

সন্দেহভাজনদের ওপর নজর রাখুন

প্রতারণা ও মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে গোয়েন্দা পুলিশ চার নাইজেরিয়ানসহ সাত প্রতারক এবং দুই মানব পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে। গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এসব বিদেশি বাংলাদেশে অবৈধভাবে বসবাস করে প্রতারণা, মানব পাচারসহ নানা অপরাধে জড়িত ছিলেন। ১২টি ব্যাংকের মাধ্যমে এরা প্রতারণা ব্যবসা করেছেন বলে প্রমাণও পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে অবৈধভাবে অবস্থানকারী বিদেশি নাগরিকদের অপরাধপ্রবণতা দেশের আইনশৃঙ্খলা ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশির সংখ্যা কয়েক লাখ। আনুমানিক হিসাবে এর মধ্যে অন্তত ২০ হাজার এ দেশে অবস্থান করছেন অবৈধভাবে। বিদেশিদের মধ্যে বিশেষভাবে ১২টি দেশের ২ হাজারেরও বেশি নাগরিক অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। এসব বিদেশি দীর্ঘদিন ধরে গোয়েন্দাদের সন্দেহের তালিকায় থাকলেও তাদের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর যথাযথ নজরদারি নেই। বাংলাদেশে বিপুলসংখ্যক বিদেশি নাগরিকের অবৈধভাবে অবস্থান যে কোনো বিবেচনায় উদ্বেগজনক। নানা কৌশলে প্রতারণা, এটিএম কার্ড জালিয়াতি, মাদক ও সোনা চোরাচালান, জাল টাকা তৈরি ও বিপণন, অবৈধ অস্ত্র ও ভিওআইপি ব্যবসার সঙ্গে বিদেশিদের জড়িত থাকার অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। বিদেশিদের একাংশ জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত বলেও সন্দেহ করা হয়। এজন্য পাকিস্তান এবং কোনো কোনো আফ্রিকান দেশের নাগরিককে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে ইতিপূর্বে গ্রেফতার করাও হয়েছে। জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত বিদেশিরা জাল টাকা তৈরির সঙ্গে যুক্ত বলেও সন্দেহ করা হয়। নাইজেরিয়াসহ বিভিন্ন আফ্রিকান দেশের নাগরিকরা পর্যটন ভিসায় এসে নিজেদের পাসপোর্ট ছিঁড়ে মাসের পর মাস ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। পাসপোর্ট না থাকায় সংশ্লিষ্ট বিদেশিদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে, তা উপলক্ষ করেই তারা এ দেশে থাকার সুযোগ পাচ্ছেন। আমাদের মতে, দেশের আইনশৃঙ্খলা ও অর্থনীতির স্বার্থে অবৈধভাবে অবস্থানরত বিদেশিদের ব্যাপারে সরকারকে কঠোর হতে হবে। দুনিয়ার কোনো দেশেই অবৈধভাবে কোনো বিদেশির অবস্থানকে মেনে নেওয়া হয় না। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এর অন্যথা হওয়া উচিত নয়। বিশেষত যেসব বিদেশি অপরাধ তৎপরতার সঙ্গে জড়িত, তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দেশ থেকে বহিষ্কারের উদ্যোগ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর