শুক্রবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থা

আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে

রাজধানী ঢাকাকে বলা হয় যানজটের নগরী। ক্রমান্বয়ে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে এ মেগাসিটি। যানজটের কারণে রাজধানীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যেতে যে সময় ব্যয় হয়, সে সময়ে বিমানে করে অন্য দেশ থেকে ঘুরে আসাও সম্ভব। ঢাকা মহানগরীর যানজটের অন্যতম প্রধান কারণ ট্রাফিক আইন মেনে না চলার প্রবণতা। এ ব্যাপারে পরিবহন চালক, পথচারী কেউ পিছিয়ে নেই। রাজধানীতে জনসংখ্যা ও যানবাহনের বিপরীতে সড়কের সংখ্যা কম। যে সড়ক আছে তার এক উল্লেখযোগ্য অংশ থাকে গাড়ি পার্কিং আর দোকানপাটের অপদখলে। ফুটপাথের বৃহৎ অংশই অপদখলের শিকার। পথচারীদের স্বাচ্ছন্দ্যে পথচলার অধিকারও কেড়ে নিচ্ছে অপদখলকারীরা। ইচ্ছা হলেই মোটরসাইকেলধারীরা ফুটপাথকে তাদের চলার পথ বানিয়ে নেয় নির্বিবাদে। এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা তোয়াক্কা না করে আইন ভঙ্গে অভ্যস্ত অর্বাচীনরা। রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থার জন্য বিড়ম্বনা হয়ে দাঁড়িয়েছে আইনের রক্ষকদের আইন মেনে না চলার প্রবণতা। পুলিশের গাড়ি  উল্টো পথে চলার ঘটনা যে কারোরই চোখে পড়বে। পিছিয়ে নেই ঊর্ধ্বতন বেসরকারি কর্মকর্তা এমনকি ক্ষমতাদর্পী রাজনীতিকরাও। আশার কথা, এ নৈরাজ্য অবসানের উদ্যোগ চলছে। রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থান গ্রহণের কথা ঘোষণা করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। গতকাল রাজধানীর গাবতলীর আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেছেন, কোনোভাবেই ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না। যারাই ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করবে তাদের বিরুদ্ধেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্টোপথে গাড়ি চালালে গাড়িতে স্টিকার ও হুটার ব্যবহার করলে তাদের বিরুদ্ধে তত্ক্ষণাৎ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঢাকার পুলিশ কমিশনারের এ ঘোষণাটি অভিনন্দনযোগ্য। তবে এ বিষয়ে শুধু সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে থাকলে চলবে না, বাস্তবায়নও নিশ্চিত করতে হবে। অন্যান্য ক্ষেত্রেও যারা ট্রাফিক আইন ভাঙছে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর হতে হবে। রাজধানীতে যেখানে-সেখানে গাড়ি পার্কিং, যেখানে- সেখানে বাসে যাত্রী ওঠা-নামাসহ রাস্তা দখলের যে যথেচ্ছতা চলছে তার অবসানে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর শক্ত অবস্থানের বিকল্প নেই। রাজধানী ঢাকাকে বাসযোগ্য নগরীতে পরিণত করতে হলে ট্রাফিক ব্যবস্থায় যে যাচ্ছেতাই অবস্থা চলছে তার অবসান জরুরি। আমাদের বিশ্বাস এ ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হলে যানজট অন্তত ২৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আসবে। হ্রাস পাবে জনদুর্ভোগ।

সর্বশেষ খবর