রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

রাখাইনে সহিংসতা

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে হবে

কফি আনান কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সমস্যার সম্মানজনক সমাধানের যে আশা জ্বলে উঠেছিল, তা কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দপ করে নিভে গেছে। কমিশনের প্রতিবেদনে জঙ্গি হুমকি মোকাবিলায় রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব এবং অবাধ চলাফেরার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়। মিয়ানমার সরকারের সম্মতিতে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে গঠিত এ কমিশনের সুপারিশে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দানের প্রস্তাব থাকায় আশা করা হয়েছিল দুই যুগ ধরে বিরাজ করা এ সমস্যার জট খুলবে। মিয়ানমার সরকারকেও এ সুপারিশ সম্পর্কে দৃশ্যত নমনীয় মনে হয়েছে। কিন্তু প্রতিবেদন প্রকাশের দিনে রোহিঙ্গা জঙ্গি গ্রুপগুলো ২৪টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ঘাঁটিতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালালে সবকিছু ভণ্ডুল হয়ে যায়। এ সংঘর্ষে নিহত হয় ৭১ জন, যার মধ্যে ১২ জন বাদে অন্য সবাই রোহিঙ্গা। এ সহিংস ঘটনার পর দলে দলে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীকে। বৃহস্পতিবার সংঘর্ষ শুরুর পর টেকনাফ সীমান্তে ১৪৬ জন রোহিঙ্গাকে আটক করার পর মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়েছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের আলেকিন গ্রুপ ও পুলিশ বাহিনীর সংঘর্ষের পর রাখাইনের পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠেছে। টেকনাফ ও উখিয়া সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে বিজিবি, কোস্টগার্ড ও পুলিশ সদস্যরা।গত বছরের ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকায় দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের ক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য মারা যায়। অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুটের ঘটনাও ঘটে। এ ঘটনার পর রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানে নামে সে দেশের সেনাবাহনী। সহিংসতার শিকার হয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এর আগে ২০১২ সালের জুনেও মিয়ানমারে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় আক্রান্ত রোহিঙ্গারা দলে দলে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালায়।  রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের জন্য বিষফোঁড়া হয়ে অবস্থান করছে।  মিয়ানমারে নতুন করে সহিংসতায় সে দেশের একজন নাগরিকও যাতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সুযোগ না পায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর