রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

আর্থিক সামর্থ্যধারীদের জন্য হজ ফরজ ইবাদত

মাওলানা আবদুর রশিদ

হজ ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। পবিত্র কাবাগৃহ পর্যন্ত যাওয়া-আসার সামর্থ্য যাদের আছে এমন মুমিনদের জন্য হজ ফরজ করা হয়েছে। সূরা আলে ইমরানের ৯৭ নম্বর আয়াতে এ সম্পর্কে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ মানুষের জন্য বায়তুল্লাহর হজ করা ফরজ করেছেন, যে সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য রাখে।’

প্রিয়নবী (সা.) ইরশাদ করেন, হজ ও ওমরাকারীগণ হচ্ছে আল্লাহতায়ালার মেহমান, তারা যদি আল্লাহর কাছে দোয়া করে, তবে তিনি তা কবুল করেন। আর যদি তারা ক্ষমা প্রার্থনা করে, তাহলে তিনি তাদের ক্ষমা করে দেন। (ইবনে মাজাহ, মিশকাত)।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, হজে মবরুর তথা মকবুল হজের প্রতিদান হলো জান্নাত। (সহিহ বোখারি)

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, বায়তুল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছে হজব্রত পালনের প্রয়োজনীয় সওয়ার (পরিবহন খরচ) ও পাথেয় (অন্যান্য প্রয়োজনীয় খরচ) যার আছে, সে যদি হজ আদায় না করে, তবে সে ইহুদি-খ্রিস্টান হয়ে মৃত্যুবরণ করুক, তাতে আল্লাহপাকের কিছু যায়-আসে না। কারণ, আল্লাহপাক ঘোষণা দিয়েছেন—‘আল্লাহ মানুষের জন্য বায়তুল্লাহর হজ ফরজ করেছেন। যদি সে সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য রাখে।’

সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কেউ যদি হজ পালন না করে তবে তাকে গোনাহগার হতে হবে ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলেন, আমার ইচ্ছা হয়, লোক পাঠিয়ে দেখি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কে হজ সম্পাদন করে না, তাদের ওপর জিজিয়া কর আরোপের হুকুম জারি করি, কারণ তারা মুসলমান নয়। (তাফসিরে ইবনে কাসির)।

সবারই জানা জিজিয়া কর ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় একমাত্র অমুসলিমদের ওপর আরোপ করা হতো। যারা হজ করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ পালন করেনি, তাদের মুসলমান বলতেও রাজি ছিলেন না ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা। এ থেকে উপলব্ধি করা সম্ভব, আর্থিক ও শারীরিক সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যারা হজ থেকে দূরে থাকবে তারা আল্লাহর ফরজ হুকুম অমান্য করার দায়ে দায়ী হবে।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, সামর্থ্যবান হয়েও যে ব্যক্তি জাকাত ও হজ আদায় করে না, মৃত্যুর সময় সে তার হায়াত বৃদ্ধির জন্য আক্ষেপ করবে। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো এ ধরনের আক্ষেপ তো অবিশ্বাসীদের করার কথা। তিনি জবাব দেন— না বিশ্বাসীদের জন্যও এটা প্রযোজ্য।

আল্লাহ মানুষকে ধনসম্পদ দেন। এটি আল্লাহর রহমত। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যারা হজ পালনে অনীহা দেখায় এটি গুনাহের কাজ।  আল্লাহ আমাদের মধ্যে যারা সামর্থ্যবান তাদের সবাইকে হজ সম্পাদনের তৌফিক দান করুন। হজ পালনকালে সবারই উচিত মদিনায় রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা শরিফ জিয়ারত করা। তার শানে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর