বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসনীয় নির্দেশ

বন্যার পানি আটকিয়ে মাছ চাষ কাম্য নয়

কথায় বলে কারও পৌষ মাস কারও সর্বনাশ। বন্যায় যখন লাখ লাখ মানুষের চোখের পানি প্লাবনের পানিতে একাকার হচ্ছে, তখন একদল লোভী মানুষ বন্যার পানি আটকে মাছ চাষের কসরত করছে। কালভার্ট বন্ধ করে পানি আটকিয়ে মাছের খামার তৈরির অপ্রয়াস চালাচ্ছে। স্বস্তির কথা বিষয়টি দেশের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন বন্যার পানি আটক কিংবা ব্রিজ-কালভার্ট বন্ধ করে কেউ যাতে মাছ চাষের অপপ্রয়াস কিংবা পানি আটকে মানুষের দুর্ভোগ বাড়াতে না পারে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়ারও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। খাল ও জলাশয় বন্ধ করে মাছ চাষ আমাদের দেশের গ্রামগঞ্জের ক্ষমতাবানদের একাংশের মজ্জাগত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সুন্দরবন সংলগ্ন সুবিখ্যাত ঘষিয়াখালের নাব্য নষ্ট হয়েছে ক্ষমতাবানদের মাছ চাষের কারণে। এ খাল খনন করতে সরকারকে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। খোদ রাজধানীতে ডিএনডি এলাকায় বছরের পর বছর ধরে যে জলাবদ্ধতা রয়েছে তার অন্যতম কারণ পানি আটকে মাছ চাষের প্রবণতা। তাতে ক্ষমতাদর্পী স্থানীয় টাউট রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের পকেট স্ফীত হলেও এলাকাবাসীর সর্বনাশ ডেকে আনছে। দেশের সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতার পেছনে নদ-নদী, খাল ও জলাশয়ের নাব্য নষ্ট হওয়া অন্যতম দায়ী। ছোট ছোট নদী ও খালের এক বড় অংশ নাব্য হারানোর পেছনে রাজনৈতিক টাউটদের মাছ চাষের কসরত যে দায়ী তা স্পষ্ট। আমরা আশা করব প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশ পালনে জেলা প্রশাসকরা তৎপর হবেন।  জনভোগান্তি সৃষ্টি করে যারা বিভিন্ন জনপদে পানি আটকিয়ে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমনটিও প্রত্যাশিত। আমরা নীতিগতভাবে মাছ চাষের বিপক্ষে নই।  তবে মাছ চাষের নামে কেউ প্রাকৃতিক জলাশয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে কিংবা ফসলের জমি এবং জনপদে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করবে এমন যাচ্ছেতাই আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। বৃহত্তর জনস্বার্থেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসরণে প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।

সর্বশেষ খবর