বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

উচ্চশিক্ষা আজ কোন পথে?

বাহালুল মজনুন চুন্নু

উচ্চশিক্ষা আজ কোন পথে?

উচ্চশিক্ষার প্রচলন হয়েছিল সমাজের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতার প্রশিক্ষণের নিমিত্তে। চীনের সম্রাট সুন খ্রিস্টপূর্ব ২২৫৫ থেকে ২২০৫ অব্দ পর্যন্ত তার রাজত্বকালে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে দেশের প্রশাসক নির্বাচনের রীতি প্রচলন করেছিলেন। এ চাকরি পাওয়ার জন্য তৎকালীন চীনে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ধুম পড়ে গিয়েছিল। অর্থনৈতিকভাবে সক্ষমতা অর্জনের জন্য উচ্চশিক্ষা লাভের ধারণার এটি প্রাচীন নিদর্শন। এ ধারার সঙ্গে ব্যক্তি ও রাষ্ট্রের নৈতিকতা, যথার্থ সামাজিক সম্পর্ক, ন্যায়বিচারের বিষয়টি যুক্ত হয় কনফুসিয়াস প্রদত্ত মতবাদের মধ্যদিয়ে। এতে জ্ঞানের সৃজন ও সঞ্চারণকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। আর ভারতবর্ষের বনাশ্রমে উচ্চশিক্ষার নিদর্শন খুঁজে পাওয়া যায় খ্রিস্টপূর্ব পনেরশ অব্দ থেকে। তপোবনে গুরুদের কাছ থেকে দীক্ষা নেওয়ার জন্য তরুণ শিষ্যরা সেখানে অবস্থান করে দার্শনিক ভাবনা, জ্ঞানার্জন ও সত্যানুসন্ধানে নিজেদের ব্যাপৃত রাখত। খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম শতকে প্রতিষ্ঠিত তক্ষশীলায় ছাত্রদের শেখানো হতো বেদ, ভাষা, ব্যাকরণ, দর্শন, চিকিৎসাশাস্ত্র, ধনুর্বিদ্যা, রাজনীতি, যুদ্ধবিদ্যা, জ্যোতিষশাস্ত্র, গণিত, অর্থনীতি, সংগীত ও যেখানে চাণক্য, পাণিনি, চরক, জীবকের মতো খ্যাতিমান পণ্ডিত ছিলেন। খ্রিস্টপূর্ব ৩৮৫ অব্দে গ্রিসের এথেন্সে অবস্থিত একাডেমাস নামক বাগানে প্লেটো স্থাপিত একাডেমিতে উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। পঞ্চম শতাব্দীতে গড়ে ওঠা নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় পৃথিবীর সর্বপ্রথম আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ই ছিল না, এটা ছিল পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জ্ঞানকোষাধার যেখানে জ্ঞানের নানাবিধ শাখা-প্রশাখার চর্চা হতো। মরক্কোর আল কারুইন বিশ্ববিদ্যালয়, মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়, মালির টিমবুকতুর শংকর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মীয় ও দর্শন সংক্রান্ত উচ্চশিক্ষা দেওয়া হতো। ইতালির বোলোংগা, ফ্রান্সের প্যারিস এবং ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মীয় ও দর্শন সংক্রান্ত উচ্চশিক্ষারই প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়। নতুন জ্ঞানের সন্ধান-সৃজন ও জ্ঞানের দিগন্তের প্রসারণই ছিল ওই সময়ের উচ্চশিক্ষার লক্ষ্য। পুঁজিবাদের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদন কাঠামো এবং বাজার ব্যবস্থার সমন্বয়ের প্রয়োজনে উচ্চশিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে যুক্ত হয় অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জনের বিষয়টি। একদিকে উচ্চশিক্ষা জ্ঞানের জগতে বহু নতুন জ্ঞানের সংযোজনের মাধ্যমে সমৃদ্ধ করেছে বিশ্ব জ্ঞানভাণ্ডার অন্যদিকে পেশাগত দক্ষতা সৃষ্টির মধ্যদিয়ে আর্থ-সামাজিক দিক দিয়ে সমাজ ও দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছে সামনের দিকে। বিশ্বে যে দেশে উচ্চ শিক্ষিতের সংখ্যা বেশি সে দেশ আর্থ-সামাজিক দিক দিয়ে তত উন্নত হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশে উচ্চশিক্ষা বিস্তারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসনসহ নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তারই কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিশ্বাস করেন যোগ্য ও দক্ষ নাগরিক গড়ে তোলার জন্য উচ্চশিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। তিনি সব নাগরিকের জন্য উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে চান। এ জন্য একে একে গ্রহণ করেছেন অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ সবচেয়ে লাভজনক এবং নিরাপদ রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ। অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথ, ডেভিড রিকার্ডো এবং মার্শালের মতে, শিক্ষা এমন একটি খাত যার কাজ হলো দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলে পুঁজির সঞ্চালন ঘটানো। ষাটের দশক থেকে ‘ইকোনমিক্স অব এডুকেশন’ তথা শিক্ষার অর্থনীতি বেশ গুরুত্ব পেতে থাকে। অর্থনীতিবিদ থিওডোর শুলজ্ দেখিয়েছেন যে, প্রাথমিক শিক্ষায় বিনিয়োগ করা সম্পদের সুফল ফেরত আসে ৩৫ শতাংশ, মাধ্যমিক শিক্ষায় ২০ শতাংশ এবং উচ্চশিক্ষায় ১১ শতাংশ। শিক্ষায় বিনিয়োগের সুফল পেতে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে শিক্ষা খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটে যায়। যার ধারাবাহিকতায় দেখা যায় এদেশে সাক্ষরতার হার বর্তমানে একাত্তর শতাংশে উত্তীর্ণ হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষায় অংশগ্রহণের হার প্রায় শতভাগ। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষায় অংশগ্রহণের হারও বেড়েছে আশাতীত। এ কারণে উচ্চশিক্ষা গ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যাও এখন বেশি। বর্তমানে পাবলিক, প্রাইভেট মিলিয়ে ১৩৭টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২১৪৫টি। বর্তমানে উচ্চশিক্ষা (স্নাতক ও স্নাতকোত্তর) পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখের মতো যা ইউরোপের বেশ কিছু উন্নত দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি; যার মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনেই প্রায় ২১ লাখ শিক্ষার্থী। এ সংখ্যাটি আশাপ্রদ। তবে উচ্চশিক্ষার গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন যে দেখা দিয়েছে তা স্বীকার করতে হবে। এটা হয়েছে মূলত সার্টিফিকেট অর্জনের বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়ার প্রবণতার জন্য। শিক্ষার্থীদের স্কন্ধে যদি চাকরি প্রার্থনার ভূত চাপিয়ে দেওয়া হয় তবে সার্টিফিকেট প্রাপ্তি মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়াবেই। আর সেক্ষেত্রে শিক্ষার গুণগতমান নিম্নমুখী হতে বাধ্য; যেটা

হচ্ছে আমাদের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলোতে। এ জন্য পরিবার, সমাজসহ সামগ্রিক ব্যবস্থাই দায়ী। ১৯৯২ সালের জেনারেল অ্যাগ্রিমেন্ট অন ট্রেড ইন সার্ভিসেস (জিএটিএস) এ শিক্ষা খাতসহ প্রায় দেড় শতাধিক খাতকে শনাক্ত করা হয়েছিল সেবা খাত হিসেবে যেগুলোতে রাষ্ট্রের পাশাপাশি ব্যক্তিগত বিনিয়োগের কথাও বলা হয়েছিল। আর তখন থেকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মধ্যদিয়ে শুরু হয়ে যায় শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণের পাকাপোক্ত কৌশল। অধিকাংশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মূল লক্ষ্যই যেন হয়ে দাঁড়িয়েছে সনদবিক্রি বাণিজ্য। তাদের সওদাগরি মানসিকতার বলি হচ্ছে শিক্ষা ও শিক্ষার্থীরা। এ খাতের সাফল্য যতটুকু এসেছে তা মূলত ব্যবসায়িকভাবেই এসেছে। আর একাডেমিক সাফল্য এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। এগুলোতে জ্ঞানচর্চাই ঠিকমতো হয় না, গবেষণা তো বহুদূরের ব্যাপার। এমনকি নৈতিকতা, মূল্যবোধ, প্রগতিশীলতা, সামাজিকতা, মানবিকতার শিক্ষাও তেমন দেওয়া হয় না। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে তো ‘শর্টকাট’ পদ্ধতিতে ডিগ্রি দেওয়ার কথাও শোনা যায়। ফলে এ ধারায় তথৈবচ অবস্থা চলছে যা আশঙ্কার। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ সরকারি-বেসরকারি কলেজগুলোতেও। এগুলোতেও অর্থ উপার্জনের বিষয়টিই যেন মুখ্য হয়ে উঠেছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে উচ্চশিক্ষা ঠিক কাঙ্ক্ষিত মানের হচ্ছে না। একবার রবীন্দ্রনাথকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সংজ্ঞা কী? কবি ছোট্ট উত্তরে বলেছিলেন- যেখানে বিদ্যা উৎপন্ন হয়। বিশ্ববিদ্যালয় হলো জ্ঞানচর্চার জায়গা। এখানে যুক্তি, তর্ক ও গবেষণার মধ্যদিয়ে নতুন কিছু বেরিয়ে আসবে। প্রচলিত জ্ঞানকে ভিত্তি করে নতুন নতুন জ্ঞান কিংবা উদ্ভাবনাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ। বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা— দুটি বিষয় নতুন জ্ঞানের উদ্ভাবনে পরস্পর পরিপূরক। অথচ অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা চলছে অনেকটা পুঁথিগত বিদ্যায়। আবার কলেজগুলোতে নিয়মিত ক্লাস হয় না। মফস্বলের সরকারি কলেজের চিত্র সবচেয়ে ভয়াবহ। সেখানকার শিক্ষকরা বেশিরভাগ সময়ই শহরে পড়ে থাকে। তাছাড়া নকলসহ আরও নানামুখী সমস্যা তো আছেই। ঢাকা শহরের কলেজগুলোরও প্রায় একই দশা। সবর্ত্রই অনিয়ম, সবর্ত্রই অবহেলা। কিছু কিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের অতি রাজনীতিকরণও শিক্ষার পরিবেশকে ব্যাহত করছে। রাজনীতি থাকবে। শিক্ষাঙ্গনে ছাত্ররাজনীতির মধ্যদিয়েই আগামী দিনের নেতৃত্ব তৈরি হবে। এটি গণতান্ত্রিক একটি প্রক্রিয়া। কিন্তু ছাত্ররাজনীতির নামে শিক্ষাঙ্গনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি কখনোই কাম্য হতে পারে না। উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য এসব ক্ষেত্রে কেবল সরকারই নয়, প্রত্যেক স্টেকহোল্ডারকে বিশেষ করে পরিবার, শিক্ষক, শিক্ষা প্রশাসকদের সতর্ক থাকতে হবে এবং যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে। উচ্চশিক্ষার সংখ্যাগত প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হলেও যদি গুণগত মানের উন্নয়ন ঘটানো না যায় তবে রেট অব রিটার্নের সব হিসাব উল্টে যাবে। বরং বুমেরাং হয়ে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বেনজামিন গিনসবার্গের মতো কয়েকজন তাত্ত্বিক যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার বুদ্ধুদ নামের একটি তত্ত্ব দিয়েছিলেন যেখানে তারা দেখিয়েছিলেন যে, যদি উচ্চশিক্ষায় অতিরিক্ত ব্যয় করা হয় তবে তা দীর্ঘমেয়াদে দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতির কারণ। তাদের এ যুক্তি ধোপে টেকেনি। কিন্তু তারপরও বিতর্ক থেকে যায় এ কারণেই যে, যদি কোনো দেশ গুণগতমানের নিশ্চয়তা বিধান ছাড়া উচ্চশিক্ষায় বেশি ব্যয় করে কিংবা তথাকথিত উচ্চশিক্ষিতের সংখ্যা বৃদ্ধি করে তবে তা দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটের জন্য ভয়ের কারণ হতে বাধ্য। আমাদের দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যার প্রবৃদ্ধি সেই আশঙ্কারই প্রতিধ্বনি। যখন একজন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীকে অফিস সহায়ক তথা পিয়নের পদে আবেদন করতে দেখি তখন খুবই ব্যথিত হই। বিভিন্ন অফিস পরিচালনার জন্য এ পদে লোক দরকার হয় এবং এর জন্য অষ্টম শ্রেণি পাসই যথেষ্ট। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা কলেজ থেকে পাস করা ছাত্ররা যখন সেই পদে আবেদন করে তখন চিন্তিত হয়ে ভাবী, আমাদের উচ্চশিক্ষার গলদ কোথায়? আবার যখন কেমিস্ট্রি, মাইক্রোবায়োলজি থেকে পাস করে ব্যাংকে চাকরি করতে দেখি তখনো ভাবিত হই, উচ্চশিক্ষার কাঙ্ক্ষিত ব্যবহার না হওয়ার কারণ কী? একদিকে সীমিত চাকরির বাজার, সার্টিফিকেট সর্বস্ব উচ্চশিক্ষা এবং চাকরির বাজারের সঙ্গে সঙ্গতিহীন উচ্চশিক্ষা অন্যদিকে বিশেষায়িত দক্ষতার ঘাটতির কারণে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পরও কাঙ্ক্ষিত চাকরি পাচ্ছেন না স্নাতক ও স্নাতকোত্তররা। শিক্ষাগত যোগ্যতা আর কাজের বাজারের চাহিদার মধ্যে বিশাল ফারাক থাকাই এ সমস্যার মূল কারণ। শিক্ষার ভিত্তিতে অর্থনৈতিক নীতি এবং অর্থনীতির গতি-প্রকৃতির আলোকে শিক্ষাব্যবস্থার সমন্বয় না করলে এ সমস্যার সমাধান হবে না। এ জন্য শ্রমবাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সময়োপযোগী শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করতে হবে। আবার জ্ঞানের সৃষ্টি, সঞ্চারণের জন্য গবেষণার প্রতিও জোর গুরুত্ব দিতে হবে।

আশার কথা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশনায় উচ্চশিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ প্রণয়ন করা হয়েছে। ‘অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল আইন-২০১৬’র খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভার্চুয়াল ক্লাসরুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতকরণে ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে। বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যুগের উপযোগী নিত্যনতুন বিভাগ খোলা হচ্ছে। হেকেপসহ দুটি প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণার জন্য দেশের ২৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৬টি গবেষণা উপ-প্রকল্পে কাজ চলছে। পেশাভিত্তিক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেমন প্রকৌশলী, চিকিৎসক ইত্যাদি পেশাভিত্তিক শিক্ষায় ব্যবহারিক কাজের অনুশীলনের জন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি ও প্রাযুক্তিক সুবিধা সরবরাহ করা হচ্ছে। উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নে ‘কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। সরকার উচ্চশিক্ষা সহজ করতে এক হাজার কোটি টাকার একটি ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে। সেশনজট নামক ভয়াবহ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। উচ্চশিক্ষার বিস্তার ও গুণগত মানোন্নয়নে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নিরলস কর্মকাণ্ড এদেশে জ্ঞানের সৃজন-সঞ্চারণের পথকেই কেবল সম্প্রসারিত করছে না, দক্ষ কর্মোদ্যম আগ্রহী শিক্ষিত মানবসম্পদ গড়ে উঠছে। তবে আরও যে সমস্যাগুলো উচ্চশিক্ষাকে এখনো আঁকড়ে ধরে আছে সেগুলো সমাধানে ম্যাসিভ আকারে উদ্যোগ নিতে হবে এবং তাহলে উচ্চশিক্ষার রেট অব রিটার্নের সুফল পাবে দেশ, দেশের অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত হবে আরও দ্রুতগতিতে।

লেখক : সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর