বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আতপ আমদানির সিদ্ধান্ত

পরামর্শকদের জবাবদিহিতা কাম্য

চালের দামের ঊর্ধ্বগতি জনমনে অস্বস্তি করেছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে। দেশের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষই সিদ্ধ চালে অভ্যস্ত আতপে অভ্যস্ত মাত্র ২০ ভাগ। যারা আতপ চাল খাওয়া পছন্দ করেন তাদেরও অনীহা রয়েছে বিদেশ থেকে আসা মানহীন আতপ চালে। অথচ খাদ্য সংকট মোকাবিলায় ভিয়েতনাম থেকে এ পর্যন্ত যে চাল আমদানি করা হয়েছে তার সিংহভাগই আতপ। এমনকি মিয়ানমার থেকেও আতপ চাল আমদানি করা হচ্ছে। দেশে চালের দাম মাত্র এক বছরেই অন্তত ৫০ ভাগ বৃদ্ধি পেলেও আমদানিকৃত আতপ চাল ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। সাধারণ মোটা চালের দাম ৫০ টাকা ছাড়িয়ে গেলেও ওএমএসের আতপ চাল ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করাও কঠিন হয়ে পড়ছে। বাজারে চালের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে বিদেশ থেকে আতপ চাল আমদানি করার ভুল সিদ্ধান্ত বাজার নিয়ন্ত্রণে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। অভিযোগ উঠেছে বিদেশ থেকে আতপ চাল আমদানিতে একজন সচিবের বিশেষ আগ্রহ কাজ করেছে। দেশে চালের বাজারে যে ঊর্ধ্বগতি চলছে তা জিইয়ে রাখতে এমন বিভীষণ মার্কা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কিনা সে প্রশ্নটি স্বভাবতই বোদ্ধাজনদের মাঝে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আতপ চালের পক্ষে সাফাই গেয়ে খাদ্যমন্ত্রী যে বক্তব্য রেখেছেন তাতে প্রমাণিত হয় বাস্তবতার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে চলার বিলাসিতায় তিনিও ভুগছেন। চালের দামে যে অনিয়ন্ত্রিত ঊর্ধ্বগতি চলছে তাতে চালকল মালিকদের মুনাফাখোরি মনোভাব যেমন দায়ী তেমন দায়ী খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আতপ চাল আমদানির সিদ্ধান্ত। দেশের ৮০ ভাগ মানুষের কাছে অগ্রহণযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও যারা আতপ চাল আমদানিতে কলকাঠি নেড়েছেন, তাদের এ সিদ্ধান্তের পেছনে সংকট মোচনের বদলে তা আরও ঘনীভূত করার মতলব জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা উচিত। আমাদের বিশ্বাস এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কুশীলবদের বিষয়ে তদন্ত করা হলে কেঁচো খুঁড়তে সাপও বেরিয়ে আসতে পারে। আমাদের মতো দেশে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সরকারের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। সমস্যার সমাধানে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার বদলে যারা ভুল সিদ্ধান্ত নিতে প্ররোচনা জুগিয়েছেন তাদের জবাবদিহিতায় সম্মুখীন করা হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর