শিরোনাম
শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব রসুল (সা.)

মাওলানা মুহম্মাদ সাহেব আলী

মানব জাতির জন্য সর্বক্ষেত্রে অনুকরণীয় বলে বিবেচিত হতে পারেন যে মহাপুরুষ তিনি হলেন আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি ছিলেন একাধারে আল্লাহর রসুল, দুনিয়ার সর্বকালের শ্রেষ্ঠ শাসক, সেরা বিচারক, সেরা সমাজসেবক এবং সর্বকালের সেরা মানব। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৪শ বছর আগে মক্কার অভিজাত কোরাইশ বংশের বনু হাশিম গোত্রে। মক্কার সামাজিক নেতৃত্ব ছিল এই গোত্রের হাতে। পবিত্র কাবাগৃহের খেদমতগার হিসেবে তাদের বিশিষ্ট মর্যাদা ছিল মক্কার বাইরেও। তিনি বিয়ে করেছিলেন মক্কার ধনাঢ্য মহিলা ব্যবসায়ী বিবি খাদিজা (রা.)-কে। এ বিয়ে তাকে ধনবান করে তোলে। মদিনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সেই রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান। সেই হিসেবে বিলাসী জীবনযাপনের সুযোগ ছিল তার জন্য অবারিত। কিন্তু আল্লাহর নবী অত্যন্ত সহজ-সরল জীবনযাপন করতেন। তিনি ও তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিলাসিতার কোনো ছাপ ছিল না। পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় কাজে দৈহিক শ্রমদানেও তিনি বার বার এগিয়ে এসেছেন। মসজিদে নববী প্রতিষ্ঠার সময় রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঠোর পরিশ্রম করেছেন। সাহাবিদের পাশাপাশি নিজেও স্বেচ্ছাশ্রম দিয়েছেন আল্লাহর ঘর তৈরির জন্য। খন্দকের যুদ্ধে পরিখা তৈরির জন্য তিনি পরিশ্রম করেছেন অন্যান্য মুজাহিদের মতোই। সর্বকালের এই শ্রেষ্ঠ মানব নিজের জামা-কাপড় নিজে কাচতেন। এমনকি নিজের জুতা নিজে সেলাই করতেন। পরিবারের কাজে অন্যদের তিনি সাহায্য করতেন। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবিকার জন্য ব্যবসা করেছেন। ব্যবসা ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন সততার মূর্ত প্রতীক। তিনি যে আয় করতেন তা দিয়ে পরিবারের সদস্যদের লালন-পালনে ব্যয় করতেন। গরিব-দুঃখীদের প্রতিও বাড়িয়ে দিতেন হাত। রাষ্ট্রীয় এবং ধর্মীয় দায়িত্বে কঠোর পরিশ্রম করা সত্ত্বেও তিনি প্রতিবেশীদের খোঁজখবর রাখতেন। তাদের সুখ-দুঃখে একাত্ম হতেন। তারা অভুক্ত থাকলে আহারের ব্যবস্থা করতেন। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করছেন— ওই ব্যক্তি মুমিন নয়, যে পেট ভরে খায় অথচ তার প্রতিবেশী তার পাশে অনাহারে থাকে। (বায়হাকি)

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মত হিসেবে তার জীবনাচরণকে অনুসরণ আমাদের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। তাকে অনুসরণের মাধ্যমে আমরা একটি শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখতে পারি। যার প্রয়োজনীয়তা এ মুহূর্তে অনস্বীকার্য।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর