শিরোনাম
সোমবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা শিশুদের দুরবস্থা

আন্তর্জাতিক সহায়তা জরুরি

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে তিন লাখেরও বেশি শিশু। এর মধ্যে দুই লাখেরও বেশি শিশু যাদের বয়স ১০ বছরের মধ্যে তারা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য পরিচর্যার তেমন কোনো সুযোগ ছিল না। সে দেশের সেনাবাহিনী ও রাখাইন মিলিশিয়াদের নির্যাতন-নিপীড়ন এবং জ্বালাও-পোড়াও নিধনযজ্ঞের মুখে যারা বাংলাদেশে এসেছে তাদের দিনের পর দিন রোদ বৃষ্টির মধ্যে পাহাড়, বন-জঙ্গল ডিঙিয়ে হেঁটে আসতে হয়েছে। আসার পথেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে বেশিরভাগ রোহিঙ্গা। শিশুদের ক্ষেত্রে অসুস্থতার সংখ্যা স্বভাবতই বেশি। আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউনিসেফের মতে, মিয়ানমারের রাখাইন থেকে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে তিন লাখেরও বেশি শিশু। এর মধ্যে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর সংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজার। পাঁচ থেকে দশের মধ্যে শিশু আরও অন্তত এক লাখ। বাকিরা সংজ্ঞায় শিশু হলেও বয়সে কিশোর। বাংলাদেশে এসেও খাদ্য, শিক্ষা ও চিকিৎসা— কোনোটাই ঠিকঠাক মতো পাচ্ছে না শিশুরা। বেসরকারি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যেসব ত্রাণসামগ্রী দিচ্ছে, তার অনেকাংশই বড়দের জন্য। অথচ মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৬০ শতাংশই শিশু। উপযুক্ত খাদ্য ও চিকিৎসার অভাবে তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। রোগবালাই রোহিঙ্গা শিশুদের পিছু ছাড়ছে না। শিশুদের বড় অংশই শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ নানা চর্মরোগে আক্রান্ত। বিভিন্ন ক্যাম্পে কয়েকজন শিশু মারাও গেছে। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন মেডিকেল ক্যাম্পে রোহিঙ্গা শিশুদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। চিকিৎসার চেয়েও রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য প্রয়োজন শিশু খাদ্য। ভিটামিন দূরে থাক, শিশুখাদ্যের অভাবেও নানামাত্রিক সমস্যায় ভুগছে তারা। বাংলাদেশ মানবিক কারণে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলেও লাখ লাখ মানুষের জন্য মানসম্মত আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণে সাধ্যের যেমন অভাব রয়েছে তেমন রয়েছে স্থান সংকট। বিশেষত শিশু খাদ্যের অভাব রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। এ অবস্থার মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্রুত মানবিক হাত বাড়াতে হবে। শিশুখাদ্য জোগানে জাতিসংঘসহ দাতাদেশগুলো এগিয়ে না এলে মানবিক বিপর্যয় দেখা দেবে। যা কাম্য হওয়া উচিত নয়।

 

সর্বশেষ খবর