রবিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী

সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে সবকিছু

মানুষের সাধ্যের সীমা অতিক্রম করতে চলেছে নিত্যপণ্যের দাম। বন্যা ও অতিবর্ষণে চলতি বছর কয়েক কোটি মণ ধান কম উৎপাদিত হয়েছে। শাকসবজির উৎপাদনেও ছোবল হেনেছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। নিত্যপণ্য বিশেষত চাল ও শাকসবজির দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাওয়ায় তা দেশের লাখ লাখ মানুষের জন্য দুর্ভোগ বয়ে আনছে। দেশে নিত্যপণ্যের বাজারে যে অতিমূল্যের আগুন তা স্বীকার করা হয়েছে সরকারি সংস্থা টিসিবির প্রতিবেদনেও। টিসিবির হিসাবে এক বছর আগের তুলনায় ঢাকায় চালের দাম মানভেদে ২৫.৪৯ থেকে ৩২.৯৮ শতাংশ বেড়েছে। আর এক মাস আগের তুলনায় বেড়েছে ৩.৩৩ থেকে ৭.৮৪ শতাংশ। ডালের মধ্যে মুগডাল এক সপ্তাহ আগের তুলনায় মানভেদে গড়ে ২.০৪ শতাংশ এবং অ্যাঙ্কর ডাল ১০.৫৩ শতাংশ বেড়েছে। মসুরের ডালের দাম সামান্য কমেছে আর ছোলার ডালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সাধারণ পিয়াজের দাম বেড়েছে এক সপ্তাহ আগের তুলনায় ১১.১১ শতাংশ। আর আমদানি করা পিয়াজের দাম বেড়েছে ২১.২৫ শতাংশ। পিয়াজের দাম এক বছর আগের তুলনায় বেড়েছে মানভেদে ৩৭.৩৩ থেকে ৭৬.৩৬ শতাংশ। রসুনের দাম কিছুটা কমলেও আদার দাম মানভেদে বেড়েছে এক সপ্তাহ আগের তুলনায় ২৬.৩২ শতাংশ এবং এক বছর আগের তুলনায় ২০ শতাংশ। বয়লার মুরগির দাম বেড়েছে এক সপ্তাহ আগের তুলনায় ৪ শতাংশ। এক সপ্তাহ আগে গরুর মাংসের দাম না বাড়লেও এক বছর আগের তুলনায় বেড়েছে ১৮ শতাংশ। একই সময়ের ব্যবধানে খাসির মাংসের দাম ৩৮.১০ ও দেশি মুরগির দাম ৬.৯০ শতাংশ বেড়েছে। মাছের মধ্যে রুইয়ের দাম বেড়েছে এক বছর আগের তুলনায় ৮.৩৩ শতাংশ। নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় তা সাধারণ মানুষের জীবনমানে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। মূল্যবৃদ্ধির পেছনে বন্যা ও অতি বৃষ্টির কারণটি অনস্বীকার্য। তবে মালামাল পরিবহনে চাঁদাবাজির ঘটনাও অনেক ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধিতে মদদ জোগাচ্ছে। নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি আনতে হলে মালামাল পরিবহন সহজতর করার দিকে নজর দিতে হবে। চাল যাতে কেউ মজুদ করে মূল্যবৃদ্ধিতে মদদ না জোগায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। চাল আমদানিতে আতপ চালের বদলে সিদ্ধ চাল যাতে প্রাধান্য পায় সে বিষয়টাও জরুরি। পাশাপাশি সমস্যা মোকাবিলায় কৃষি পুনর্বাসনেও জোর দিতে হবে। বিপদ উত্তরণে সেটিই হবে প্রকৃষ্ট পথ।

সর্বশেষ খবর