রবিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

পিয়াজের ঝাঁজ

উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে

পিয়াজের ঝাঁজ লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম ৫০ শতাংশ বেড়েছে সবজি ও মসলা হিসেবে ব্যবহৃত এ অতি দরকারি পণ্যটির। এক সপ্তাহ আগে যে পিয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৫০ টাকা, তা এখন ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, ভারতে পিয়াজের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারে। আগে যে দামে পিয়াজ আমদানি করা যেত তা এখন প্রায় দ্বিগুণ দামে আমদানি করতে হচ্ছে, দাম বাড়ার পেছনে মূল কারণ এটিই। আর এ সুযোগটিকে কাজে লাগাচ্ছেন অসাধু কিছু বড় ব্যবসায়ী। তারা গত সপ্তাহের তিন দিনের টানা বৃষ্টির অজুহাত তুলে দাম বাড়িয়ে দেন। খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে পিয়াজের দাম বাড়ার পেছনে বৃষ্টিকে দায়ী করা হলেও তা যথার্থ নয়। কারণ বৃষ্টিতে পিয়াজের তেমন কোনো ক্ষতিই হয়নি। দেশে চলতি বছর রেকর্ড পরিমাণ পিয়াজ উৎপাদন হয়েছে। তবে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন যথেষ্ট ছিল না। ফলে প্রতিবছরের মতো এ বছরও ভারত থেকে পিয়াজ আমদানি করতে হচ্ছে। ভারতে অতিবর্ষণ ও বন্যায় পিয়াজ উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম বেড়েছে ব্যাপকভাবে। ফলে বাংলাদেশের বাজারেও পিয়াজের দামের ঝাঁজ অসহনীয় হয়ে উঠেছে। মিসর, তুরস্ক, পাকিস্তানসহ বেশ কিছু দেশ চাহিদার চেয়ে বেশি পিয়াজ উৎপাদন করে। ঈদুল আজহার আগে বাড়তি চাহিদা পূরণ করতে মিসর থেকেও পিয়াজ আমদানি করা হয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো ভারত ছাড়া আর কোনো দেশ থেকে পিয়াজ আমদানির অবকাশ নেই। পিয়াজ এমন এক পণ্য যা জাহাজে করে দূর দেশ থেকে আমদানি করলে একাংশ পচনের শিকার হয়। আমদানির পর সে পিয়াজ বাজারজাত করার আগেই নষ্ট হয়ে যাওয়ার বিপদ দেখা দেয়। ভারত থেকে স্বল্প সময়ের মধ্যে স্থলপথে পিয়াজ আনার সুযোগ থাকায় আমদানিকালে তা নষ্টের আশঙ্কা থাকে কম। ফলে ভারতে দাম বৃদ্ধি পেলেও বাংলাদেশের আমদানিকারকদের প্রতিবেশী দেশের বাজারের ওপর আস্থা রাখতে হচ্ছে। প্রতি কেজি পিয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে বেচাকেনা হওয়ার নিয়তি নতুন পিয়াজ বাজারে ওঠা অথবা ভারতের বাজারে দাম কমা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে মনে হচ্ছে।  পিয়াজ নিয়ে প্রায় প্রতিবছর যে আহাজারি শুরু হচ্ছে তা থেকে রক্ষার একমাত্র উপায় দেশে পিয়াজের উৎপাদন বাড়ানো।  পিয়াজ সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর