বুধবার, ১ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

নকল ভেজাল ওষুধ

অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

নকল ভেজালের অবাধ রাজত্বের এই দেশে ওষুধেও চলছে নির্বিচার নকল ভেজাল। এর পাশাপাশি রয়েছে মানহীন ওষুধের দাপট। চিকিৎসকদের একাংশ মানবসেবার বদলে যেনতেনভাবে অর্থ উপার্জনের আশায় রোগীদের ভুঁইফোড় বিভিন্ন কোম্পানির মানহীন ওষুধ লিখছেন ব্যবস্থাপত্রে। দেশে ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানির সংখ্যা পৌনে তিনশর মতো। যার মধ্যে সর্বাধিক ৪০টি কোম্পানি মানসম্মত ওষুধ তৈরিতে নিয়োজিত। বাংলাদেশের ওষুধ বিক্রি হচ্ছে ইউরোপ-আমেরিকার উন্নত দেশগুলোতে। তবে দুনিয়ার যেসব দেশে নকল ভেজাল ওষুধের উৎপাদন হয় ব্যাপকভাবে বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিটফোর্ড রোডের ক্যাপিটাল মার্কেটে ওষুধের সব ধরনের কাঁচামাল পাওয়া যায়। নকলবাজরা সেখান থেকে উপকরণ সংগ্রহ করে ভেজাল ওষুধ প্রস্তুত করে। নামিদামি ব্র্যান্ডের ওষুধ সবচেয়ে বেশি নকল ও ভেজাল হলেও রহস্যজনক কারণে নকলবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আগ্রহী নয় ওষুধ কোম্পানিগুলো। অভিযোগ রয়েছে, তাদের মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের ডাম্পিং করা হয় মিটফোর্ডে। গত বছর ইসলামপুর ও বাবুবাজার চালের আড়তের পেছনে কয়েকটি নকল ওষুধ কারখানা ও গোডাউনের সন্ধানও পায় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। নকল ভেজাল ওষুধ ধরা পড়ার পরও কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়ায় এসব ওষুধ উৎপাদন-বিপণনকারী চক্র আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠার সুযোগ পাচ্ছে। নকল ও ভেজাল ওষুধের মারাত্মক প্রভাব পড়ছে জনস্বাস্থ্যের ওপর। অসুস্থ হলে রোগ নিরাময়ে মানুষ ওষুধ ব্যবহার করে। ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ খেলে অসুখ ভালো না হয়ে আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। নকল ভেজাল ওষুধ উৎপাদন এবং বিপণন দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য বিপদ সৃষ্টি করছে। মানুষ টাকা ব্যয় করে রোগ নিরাময়ের বদলে জীবনের জন্য হুমকি সৃষ্টি করে এমন ওষুধ কিনতে বাধ্য হচ্ছে। সরকার দেশবাসীর স্বাস্থ্যসেবা এবং চিকিৎসাকে অধিকার বলে স্বীকার করে নিলেও ওষুধ নকল ভেজালের বিরুদ্ধে এ যাবৎ কোনো কড়া পদক্ষেপ নিতে পারেনি।  এ ব্যর্থতা নকল ভেজাল ওষুধের কাছে দেশের সিংহভাগ মানুষকে জিম্মি করে ফেলছে।  জনস্বার্থে এ অকাম্য অবস্থার অবসান হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর