শনিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

দূর হোক লিঙ্গবৈষম্য

বাংলাদেশের অগ্রগতি আশাজাগানিয়া

দেশের মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেকই নারী। অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে পেছনে ফেলে কোনো জাতি কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি লাভ করতে পারে না। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বপরিসরে পিছিয়ে থাকার অন্যতম প্রধান কারণ অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীদের পিছিয়ে থাকার বিড়ম্বনা। আশার কথা, লিঙ্গবৈষম্য দূর করার ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল যেসব দেশ দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। গত এক দশকে এ ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ। জেনেভাভিত্তিক গবেষণা সংস্থা বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণে বাংলাদেশ গত এক বছরে ২৫ ধাপ এগিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে চীন ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের অগ্রগতি ঘটেছে দ্বিগুণের বেশি। শুধু পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করলে এই পার্থক্য তিন গুণ। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বৈশ্বিক লিঙ্গব্যবধান সূচক ২০১৭ শীর্ষক প্রতিবেদনে ১৪৪ দেশের মধ্যে এ বছরের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৪৭তম বলে তুলে ধরা হয়েছে। গত বছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৭২তম। ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো প্রকাশিত এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৯১। সেই হিসাবে গত ১০ বছরে ৪৪ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। নারীর অর্থনৈতিক অবস্থা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও রাজনীতির ক্ষমতায়ন— এ চারটি মানদণ্ডের নিরিখে বৈশ্বিক লিঙ্গব্যবধান সূচক তৈরি করা হয়। লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণে নারীর ক্ষমতায়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। গত তিন দশকের বেশি সময় ধরে দেশের রাজনীতির শীর্ষ পর্যায়ে নারী নেতৃত্বের প্রভাব লক্ষণীয়। ১৯৯১ সাল থেকে দেশের সরকারপ্রধান ও বিরোধী দলের নেতৃত্বে রয়েছেন সম্মানিত নারী নেত্রীরা। এ মুহূর্তে সংসদ নেতা, উপনেতা, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার এবং বেশ কয়েকজন নারী মন্ত্রী দায়িত্ব পালন করছেন। নারীর ক্ষমতায়নে কোনো কোনো ক্ষেত্রে অগ্রসর পশ্চিমা দেশগুলোর চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে। রাজনীতির পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে নারীর ভূমিকা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক খাতের সিংহভাগ কর্মীই নারী। তবে পুরুষশাসিত কাঠামোর কারণে দেশের নারীরা এখনো বঞ্চনার শিকার। লিঙ্গসমতা অর্জনের স্বার্থে এ ক্ষেত্রেও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর