রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

মিয়ানমারের ওপর চাপ

রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধে ভূমিকা রাখবে

রোহিঙ্গা ইস্যুতে চাপ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে মার্কিন সিনেটে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিল আনা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হলে তা তাদের বোধোদয় সৃষ্টিতে অবদান রাখবে। এতে কাজ না হলে ধীরে ধীরে নিষেধাজ্ঞার সীমা বাড়ানো হবে। যা শেষ পর্যন্ত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞায় গিয়ে ঠেকবে। মিয়ানমার সরকার অবশ্য সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাবে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, এর ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে। মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন সিনেটের নিষেধাজ্ঞা আরোপের উদ্যোগ অন্যান্য দেশকেও একই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণে উৎসাহিত করবে। মিয়ানমার দেশত্যাগী নাগরিকদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিলেও তাদের কথার সঙ্গে কাজের মিল না থাকায় প্রতিদিনই হাজার হাজার রোহিঙ্গা দেশ ছাড়ছে। রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে তারা যে প্রস্তাব দিয়েছে তা হাস্যকর ও প্রহসনের নামান্তর। প্রতিদিন ৩০০ রোহিঙ্গাকে ফেরত নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে মিয়ানমার। এ হারে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন হলে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমারের নাগরিকদের দেশে ফেরত নিতে অন্তত ১০ বছর সময় লাগবে। মিয়ানমার সরকারের সদিচ্ছা থাকলে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী সে দেশের নাগরিকদের দুই মাসের মধ্যেই ফেরত নেওয়া সম্ভব। মুক্তিযুদ্ধের পর ভারতে আশ্রয়গ্রহণকারী এক কোটি বাংলাদেশি শরণার্থীকে মাত্র দুই মাসের মধ্যে ফেরত আনা হয়েছিল। অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক স্বার্থের কারণে এশিয়ার প্রভাবশালী দেশগুলো মিয়ানমারের সঙ্গে তাদের গাঁটছড়া সম্পর্কে ব্যত্যয় ঘটাতে চায় না। শক্তিশালী প্রতিবেশী চীন মিয়ানমারের অবস্থানকে নিজের প্রতিরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। সে দেশে চীনের বিনিয়োগ এত বেশি যে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হতে পারে এমন কোনো পথে  যেতে তারা রাজি নয়। ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণে ভারত মিয়ানমারের সঙ্গে বিদ্যমান বন্ধুত্ব বজায় রাখতে চায়। রাশিয়ার অর্থনৈতিক স্বার্থও মিয়ানমারকে বেপরোয়া হয়ে উঠতে মদদ জোগাচ্ছে।  এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর শক্ত ভূমিকাই মিয়ানমারকে নিরস্ত করতে পারে। সেদিক থেকে মার্কিন সিনেটে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আনীত নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব পাস হলে তা হবে রাখাইনের রোহিঙ্গা

জনগোষ্ঠীর জন্য একটি আশাজাগানিয়া ঘটনা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর