রবিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

তিন বিদেশি প্রতারক গ্রেফতার

ওদের দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখুন

প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় আড়াই কোটি টাকা সমমানের আড়াই লাখ ইউরো হাতিয়ে নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। এরা আফ্রিকার ক্যামেরুনের নাগরিক। দীর্ঘদিন বাংলাদেশে অবস্থান করে প্রতারণা ব্যবসা চালাচ্ছিল। আইনি দুর্বলতার কারণে বিদেশি অপরাধীদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বাড়ছে। ঢাকায় গত পাঁচ বছরে প্রায় পৌনে তিন শ বিদেশি অপরাধীকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হলেও তারা জামিনে বেরিয়ে আবার একই অপরাধে জড়াচ্ছে। বাংলাদেশে আদালত থেকে মুক্তির পর বিদেশি অপরাধীকে কীভাবে দেশে ফেরত পাঠানো হবে তার নীতিমালা না থাকায় আইনশৃঙ্খলার জন্য বিড়ম্বনা ডেকে আনছে। বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশির সংখ্যা কয়েক লাখ। আনুমানিক হিসাবে এর মধ্যে অন্তত ২০ হাজার এ দেশে অবস্থান করছে অবৈধভাবে। বিদেশিদের মধ্যে বিশেষভাবে ১২টি দেশের ২ হাজারেরও বেশি নাগরিক অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। এসব বিদেশি দীর্ঘদিন ধরে গোয়েন্দাদের সন্দেহের তালিকায় থাকলেও তাদের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর যথাযথ নজরদারি নেই; যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। বিদেশি নাগরিকের অবৈধভাবে অবস্থান এবং তাদের দৌরাত্ম্য বন্ধের ব্যর্থতা যে কোনো বিবেচনায় উদ্বেগজনক। নানা কৌশলে প্রতারণা, এটিএম কার্ড জালিয়াতি, মাদক ও সোনা চোরাচালান, জাল টাকা তৈরি ও বিপণন, অবৈধ অস্ত্র ও ভিওআইপি ব্যবসার সঙ্গে বিদেশিদের জড়িত থাকার অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। বিভিন্ন আফ্রিকান দেশের নাগরিকরা পর্যটন ভিসায় এসে নিজেদের পাসপোর্ট ছিঁড়ে মাসের পর মাস বাংলাদেশে অবস্থান করছে। পাসপোর্ট না থাকায় সংশ্লিষ্ট বিদেশিদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে এবং তা উপলক্ষ করেই তারা এ দেশে থাকার সুযোগ পাচ্ছে। দেশের আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে অবৈধভাবে অবস্থানরত বিদেশিদের ব্যাপারে সরকারকে কঠোর হতে হবে। অপরাধে জড়িত বিদেশিদের শাস্তিভোগের পর স্বদেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়নেরও উদ্যোগ নিতে হবে।

সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অভাবে বাংলাদেশ বিদেশি অপরাধীদের যা ইচ্ছা তাই করার মৃগয়াৎ ক্ষেত্রে পরিণত হবে, তা কোনোভাবেই কাম্য হওয়া উচিত নয়।

সর্বশেষ খবর