রবিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ইসলামে মায়ের মর্যাদা অপরিসীম

মাওলানা মুহম্মাদ আশরাফ আলী

নারীর সবচেয়ে বড় পরিচয় সে মায়ের জাতি। স্ত্রী, বোন, কন্যা হিসেবে নারীর পরিচিতি থাকলেও তার মাতৃত্বের পরিচয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামে এ পরিচয়কে মহিমান্বিত করা হয়েছে। হাদিসে বলা হয়েছে, মায়ের পায়ের তলে সন্তানের বেহেশত। মায়ের প্রতি সবচেয়ে দায়িত্বশীল হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ইসলামে।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘জনৈক ব্যক্তি রসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করল; হে আল্লাহর রসুল! আমার কাছে কে উত্তম ব্যবহার পাওয়ার অধিক হকদার? তিনি বললেন, তোমার মা। লোকটি বলল তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। সে বলল তারপর কে? তিনি বললেন তোমার মা। সে বলল তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার পিতা।’ (বুখারি)।

আল্লাহতায়ালা মাতা-পিতাকে সর্বোচ্চ মর্যাদাবান করেছেন। যাদের সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টির ওপর সন্তানের জান্নাত-জাহান্নাম নির্ভর করে।

মাতা-পিতার অধিকারের ব্যাপারে আল কোরআনে ইরশাদ করা হয়েছে, ‘আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার সঙ্গে সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট সহ্য করে তাকে গর্ভধারণ করেছে। আর দুই বছর পর্যন্ত স্তন্যদান করেছে। সুতরাং তোমরা আমার এবং তোমাদের মাতা-পিতার কৃতজ্ঞতা আদায় কর। আমার কাছেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে।’ (সূরা লুকমান : ১৪)।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যখন কোনো অনুগত সন্তান নিজের মাতা-পিতার দিকে ভালোবাসার দৃষ্টিতে তাকায়, আল্লাহ তাকে প্রতিটি দৃষ্টির বিনিময়ে একটি কবুল হজের সওয়াব দান করেন। (বায়হাকি, মিশকাত)।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি তার মাতা-পিতা উভয়কে বা একজনকে বৃদ্ধাবস্থায় পেল, কিন্তু তাদের খিদমত করে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারল না, সে ধ্বংস হোক। (মুসলিম)।

মহান স্রষ্টার সন্তুষ্টি ও সান্নিধ্য লাভ করতে হলে, সবারই উচিত নিজ মাতা-পিতার সেবার মাধ্যমে তাদের মনে স্থান পাওয়া। তাদের সঙ্গে সদয় ব্যবহার শুধু নয়, তাদের ভালোবাসতে হবে হৃদয়ের গভীর থেকে। মাতা-পিতার ন্যায্য অধিকার সুরক্ষা প্রতিটি মুমিনের অবশ্য -পালনীয় কর্তব্য। এ কর্তব্যের ক্ষেত্রে হেলাফেলার কোনো অবকাশ নেই। বাবা-মার স্থান যেন বৃদ্ধাশ্রমে না হয়, নিজ সন্তানের ঘর হোক প্রত্যেক মাতা-পিতার সুখময় বৃদ্ধাশ্রম।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর