রবিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
ইতিহাস

নামাররকের যুদ্ধ

হজরত আবুবকর (রা.)-এর খিলাফতের আমলে মুসান্না ও খালিদ বিন ওয়ালিদের নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনী সাসানীয় সাম্রাজ্যের হিরা রাজ্য জয় করেন। হিরা রাজ্য হারিয়ে পারস্যবাসী উন্মত্ত হয়ে ওঠে এবং মুসলমানদের হাত থেকে রাজ্যটি পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট হয়। পারস্য সম্রাট তার বিখ্যাত সেনাপতি রুস্তমকে এক বিরাট সেনাবাহিনীসহ প্রেরণ করেন। খালিদ বিন ওয়ালিদ ইতিমধ্যে সিরিয়ার পথে রওনা হয়ে গিয়েছিলেন। সুতরাং মুসান্না একাকী পারস্য সীমান্তে অবস্থান করছিলেন। পারস্যবাসীর প্রবল হামলা মোকাবিলার জন্য মুসান্না খলিফা আবুবকরের কাছে অতিরিক্ত সাহায্যের মানসে স্বয়ং রাজধানীতে উপস্থিত হলেন। এ সময় হজরত আবুবকর (রা.) ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর আগে তিনি তার উত্তরাধিকারী হজরত ওমরকে (রা.) মুসান্নার জন্য নতুন সৈন্য সংগ্রহের আদেশ দিয়ে যান। হজরত ওমর (রা.) খিলাফতে অধিষ্ঠিত হয়ে হজরত আবুবকরের (রা.) অন্তিম নির্দেশ পালনে মনোযোগী হলেন। তিনি তার কাছে বায়াত গ্রহণের জন্য চারদিক থেকে যেসব লোক এলো তাদের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে বললেন। কিন্তু প্রথমে তার আহ্বানে কেউ সাড়া দিল না। পরে ওমর এবং মুসান্নার আবেগপূর্ণ ও উত্তেজনামূলক বক্তৃতায় অনুপ্রাণিত হয়ে সাকিফ গোত্রের প্রসিদ্ধ সরদার আবু উবায়দা দাঁড়িয়ে বলেন, ‘আমি এ কাজের জন্য প্রস্তুত আছি।’ আবু উবায়দার সাহসিকতায় উপস্থিত জনতার মধ্যে সাজ সাজ রব রব পড়ে গেল। চারদিক থেকে সবাই জন্য যুদ্ধের প্রস্তুত হলো। তখন হজরত ওমর (রা.) মদিনা ও পাশের এলাকা থেকে একটি বাহিনী গঠন করে আবু উবায়দাকে সেনাপতি নিযুক্ত করলেন। আবু উবায়দা ও মুসান্না সেনাবাহিনীসহ ইরাকের দিকে অগ্রসর হলেন। তারা হিরা পর্যন্ত পৌঁছলেন। পারসিক সেনাবাহিনী দুই দলে বিভক্ত হয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে অগ্রসর হলো। এক দলে সেনানায়ক ছিলেন জাবান। তিনি স্বীয় সেনাবাহিনীসহ মুসান্নাকে আক্রমণ করার জন্য হিরা অভিমুখে যাত্রা করলেন। অন্য সেনাপতি নারসি তার পারসিক সেনাদল নিয়ে কাসকার অঞ্চলের দিকে অগ্রসর হলেন। মুসান্না ও আবু উবায়দা তাদের সেনাদের সুসজ্জিত করে আক্রমণের জন্য শত্রুদের দিকে অগ্রসর হলেন। ৬৪৩ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বরে নামাররক নামক স্থানে যুদ্ধ বাধল। এ যুদ্ধে পারসিকরা জাবানের নেতৃত্বে বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করেও পরাজিত হলো এবং মুসলমানরা পুনরায় হিরা অধিকার করলেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর