সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

প্রিয় নবীর অনুসরণে আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়া যায়

মুফতি মুহাম্মদ আল আমিন

প্রিয় নবীর অনুসরণে আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়া যায়

মানবতার মুক্তির অগ্রদূত প্রিয়নবী (সা.) এর অনুসরণ করার মধ্যেই আমাদের মুক্তি নিহিত। দুনিয়া-আখেরাতের সফলতা লুকায়িত। উভয় জাহানের কামিয়াবি নিশ্চিত। আল্লাহপাকের ভালোবাসা পেতে হলে প্রিয়নবীর অনুসরণ করা জরুরি। যে যত বেশি রসুলকে অনুসরণ করবে সে তত বেশি আল্লাহর ভালোবাসা প্রাপ্ত হবে। মহান পালনকর্তার দয়া ও অনুগ্রহ লাভ করবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে— ‘হে নবী! লোকদের বলে দিন : যদি তোমরা যথার্থই আল্লাহকে ভালোবাস তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গুনাহ মাফ করে দেবেন। তিনি বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাময়।’ (সূরা আলে ইমরান : ৩১)। এ আয়াত দ্বারা বোঝা যায়, রসুল (সা.) এর অনুসরণ করার মাধ্যমে দুটি পুরস্কার অর্জিত হয়। এক. আল্লাহর ভালোবাসা লাভ হয়। দুই. সব গুনাহ থেকে ক্ষমা পাওয়া যায়। পুরস্কার দুটি এতটাই দামি যে, এগুলো পাওয়া গেলে জান্নাতে যাওয়ার জন্য আর কিছু দরকার হয় না। আল কোরআনের অন্যত্র ঘোষিত হচ্ছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং তাঁর রসুলের আনুগত্য করবে, আল্লাহ তাকে এমন জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন যার তলদেশ দিয়ে ঝরনাধারা প্রবাহিত হবে এবং তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে। আর প্রকৃতপক্ষে এ হলো বিরাট সাফল্য।’ (সূরা নিসা : ১৩)। প্রিয় পাঠক! যেখানেই জান্নাতের বর্ণনা এসেছে সেখানেই ঝরনাধারা বা প্রবাহিত পানির কথা উল্লেখ হয়েছে। আমরা জানি, পৃথিবীর যত দামি দামি শহর আছে সব আধুনিক শহর ও আবাসিক এলাকা কোনো না কোনো সাগর বা নদীর তীরে গড়ে উঠেছে। লেকের পাড়ে, নদীর তীরে বা সমুদ্র সৈকতে যেসব বাড়ি বা হোটেল থাকে সেগুলোর সৌন্দর্য হয় অনেক বেশি। জান্নাতেও মহান আল্লাহ প্রিয় বান্দাদের জন্য রেখেছেন এমন সব নয়নাভিরাম প্রাসাদ ও মনোমুগ্ধকর ভবন যার আশপাশে থাকবে প্রবাহিত পানি, লেক, ঝরনাধারা। তবে তা অর্জিত হবে রসুলে পাকের (সা.) অনুকরণ-অনুসরণ করার মাধ্যমে। হাদিসের কিতাবগুলোতেও নবীর আনুগত্য করার প্রতি ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে। প্রিয় রসুলের অনুসরণ করাকে জান্নাতে যাওয়ার শর্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল (সা.) বলেছেন : আমার সব উম্মত জান্নাতে যাবে। তবে যারা অস্বীকার করবে তারা যাবে না। জিজ্ঞাসা করা হলো, হে রসুলুল্লাহ! কারা অস্বীকার করে? তিনি বললেন : যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করল সে জান্নাতে প্রবেশ করল। আর যে ব্যক্তি আমার বিরোধিতা করল সে যেন আমাকে অস্বীকার করল। (তিরমিজি)। অর্থাৎ যারা রসুল (সা.) এর সুন্নত পালন করল না, তাঁর অনুসরণ করল না তারা যেন রসুলকে অস্বীকার করল। আর রসুলকে অস্বীকারকারী ব্যক্তি জান্নাতে যেতে পারে না। অপর হাদিসে এসেছে, নবী (সা.) এর পবিত্র মুখে উচ্চারিত হয়েছে, যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য থেকে দূরে সরে গেল এবং (মুসলমানদের সম্মিলিত) জামাত পরিত্যাগ করল এবং সে অবস্থায় সে মারা গেল, সে যেন জাহেলিয়াত ও মূর্খতার সঙ্গে মৃত্যুবরণ করল। (মুসলিম)। মহান আল্লাহ যেন আমাদের জীবনকে সুন্নতে রসুল দিয়ে সজ্জিত করার তৌফিক দান করেন। আমিন!

লেখক : খতিব, সমিতি বাজার মসজিদ, নাখালপাড়া, ঢাকা।

 

সর্বশেষ খবর