রবিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রী অপহরণ

এ ঘটনা নজিরবিহীন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলের সামনে থেকে ছাত্রী অপহরণের ঘটনায় গত শুক্রবার তুলকালাম চলেছে ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। ছাত্রীরা এ ঘটনার প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। পুলিশের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অপহূত ছাত্রীকে উদ্ধারের আশ্বাস দিলে ছাত্রীরা তাদের অবরোধ উঠিয়ে নেন। গত শুক্রবার ওই ছাত্রী সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তাপসী রাবেয়া ছাত্রী হল থেকে বের হয়েছিলেন স্নাতক (সম্মান) শেষ বর্ষের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। হলের গেট থেকে ৫০ গজ এগোতেই তাকে জোর করে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেওয়া হয়। তিন যুবক টেনে হিঁচড়ে জোর করে গাড়িতে তুলে নেওয়ার সময় ছাত্রীটি ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। অপহরণের নেতৃত্বে ছিলেন ওই ছাত্রীর সাবেক স্বামী সোহেল রানা— যিনি পেশায় একজন আইনজীবী। ক্যাম্পাসের ভিতর থেকে শিক্ষার্থী অপহরণের প্রতিবাদে শুক্রবার দুপুরের পর আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য থেকে একজন ছাত্রীকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেই নিতে হবে। কারণ, এই সংরক্ষিত এলাকা থেকে কোনো ছাত্রী অপহূত হওয়ার মানে এখানে কেউই নিরাপদ নন। এটি পারিবারিক ব্যাপার, কর্তৃপক্ষের এমন যুক্তিতে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, ক্যাম্পাস থেকে তাকে কেন টেনে হিঁচড়ে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হলো? এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। অপহূত ছাত্রীকে গতকাল ঢাকার একটি কাজী অফিস থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সাবেক স্বামী তাকে পুনরায় বিয়ের জন্য কাজী অফিসে নিয়ে গিয়েছিলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলের সামনে থেকে একজন ছাত্রীকে টেনে হিঁচড়ে মাইক্রোবাসে অপহরণের ঘটনার পেছনে যে কারণই থাকুক না কেন তা উদ্বেগজনক। ছাত্রীটির স্বামী ও শ্বশুর দুজনই আইনজীবী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে এভাবে কাউকে জোর করে নিয়ে আসা যে আইনগতভাবেও সংগত নয় তা তাদের জানা থাকার কথা। আমরা আশা করব রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের মধ্যে নিরাপত্তাজনিত যে আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে তার অবসানে কর্তৃপক্ষ সচেতন হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অবাঞ্ছিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে— এমনটিও কাম্য।

সর্বশেষ খবর