সোমবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভোজ্যতেলে মানহীনতা

কর্তৃপক্ষের নজরদারি প্রত্যাশিত

বাজারে যে ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে তার বেশিরভাগই মানহীন ও স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের গবেষণায় ভোজ্যতেলের হালহকিকতের যে চিত্র ফুটে উঠেছে তা উদ্বেগজনক। সবারই জানা ভোজ্যতেলের মান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব বিএসটিআই ও খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের। কিন্তু অন্য সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো ওই দুটি প্রতিষ্ঠানে রয়েছে স্বচ্ছতার সংকট। জবাবদিহিতার অভাবও যে প্রকট তা সহজে অনুমেয়। বিএসটিআইয়ের গবেষণায় বলা হয়েছে, সয়াবিন তেলে এমন কিছু পদার্থ মেশানো হয় যা শরীরের মেদ বাড়াতে সহায়তা করে। এমনকি নির্ধারিত পরিমাণের ‘ভিটামিন এ’ নেই এসব তেলে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি বিশেষত দোষী কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় অকাম্য অবস্থা জেঁকে বসেছে। মান নিয়ন্ত্রণে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যর্থতা জনস্বাস্থ্যে মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে। গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের গবেষণায় দেখা গেছে, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মাত্র তিন শতাংশ মানসম্মত সয়াবিন তেল বাজার থেকে কিনতে পারেন ভোক্তারা। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ৯৬ শতাংশ ভোজ্যতেল মানহীন বলে প্রমাণিত হয়েছে; যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। যেগুলোর বেশির ভাগই ফ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ও ময়েশ্চারাইজ মেশানো। বাজারে বিক্রি হওয়া এসব সয়াবিন তেল নির্ধারিতমানের অনেক নিচে। ভোজ্যতেলের মানহীন অবস্থা জনস্বাস্থ্যের জন্য যে হুমকি সৃষ্টি করছে তা একটি বাস্তবতা। ভোজ্যতেল একটি অতিপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য। মানুষ সুস্বাস্থ্যের আশায় রান্নায় ভোজ্যতেল ব্যবহার করে। সে ভোজ্যতেল যদি মানহীন হয় তবে মানুষ শুধু আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না, স্বাস্থ্যের জন্যও ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। গাঁটের টাকা খরচ করে ভোক্তারা মানহীন খাদ্যপণ্য কিনতে বাধ্য হচ্ছে তদারককারী প্রতিষ্ঠান বিএসটিআই এবং খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে। এ দুটি কর্তৃপক্ষ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে ভোজ্যতেল নিয়ে যে অকাম্য অবস্থা বিরাজ করছে তার অনেক খানিই রোধ করা সম্ভব। বিশেষ করে প্যাকেটজাত ভোজ্যতেলের ক্ষেত্রে বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঘোষিত মান বজায় রাখতে বাধ্য করা সম্ভব। কিন্তু সে ক্ষেত্রে ঘাটতি থাকায় খোলা ভোজ্যতেলের মান যেমন রক্ষিত হচ্ছে না তেমন যাচ্ছেতাই অবস্থা বিরাজ করছে প্যাকেটজাত ভোজ্যতেলের ক্ষেত্রেও। এ নৈরাজ্যের অবসানে বিএসটিআই এবং খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ সচেতন হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর