সোমবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

পিয়াজের দামে ঝাঁজ

ভোক্তাদের ভোগান্তি কমানোর উদ্যোগ নিন

পিয়াজের দাম এ বছর সর্বকালের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। খোলাবাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কিংবা আরও বেশি দামে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে পিয়াজের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২৫ থেকে ৩০ টাকা। স্বীকার করতেই হবে চলতি বছরের প্রায় পুরোটা সময় পিয়াজের দাম ছিল স্বাভাবিক। ঐতিহ্যগতভাবেই রোজা ও ঈদুল আজহার আগে পিয়াজের দাম বৃদ্ধি পায়। এ বছর এ দুই সময়েও দাম সহনশীল ছিল। বন্যা ও ভারি বৃষ্টির পর পিয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে। এ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ভারত থেকে আমদানি হয়। ভারতে বন্যা ও টানা বৃষ্টির কারণে পিয়াজের ফলন মার খাওয়ায় সে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম তিন-চারগুণ বৃদ্ধি পায়। অবস্থা বেগতিক দেখে ভারত সরকার দেশি বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখা ও রপ্তানি নিরুৎসাহিত করতে পিয়াজের রপ্তানি মূল্য বাড়িয়ে দেয়। স্বভাবতই বিপাকে পড়ে আমদানির ওপর নির্ভরশীল বাংলাদেশসহ ধারেকাছের কিছু দেশ। গত মৌসুমে দেশে রেকর্ড পরিমাণ পিয়াজ উৎপাদন হওয়া সত্ত্বেও বিরূপ আবহাওয়া এবং বিদেশ থেকে পিয়াজ আমদানি ব্যয়বহুল হয়ে পড়ায় ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে ক্রেতাদের। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে রেকর্ড পরিমাণ দাম বৃদ্ধির পেছনে অগ্রহায়ণ শেষের টানা তিন দিনের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া অনেকাংশে দায়ী বলে বোদ্ধাজনদের ধারণা। কারণ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় পিয়াজ পরিবহন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। পানিতে ভিজে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। পিয়াজের আকাশচুম্বী মূল্যতে শুধু ক্রেতা নন, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারাও। এ নিত্যপণ্যের বেচাকেনা এক-চতুর্থাংশে এসে নেমেছে। বাজারে যখন নতুন পিয়াজ ওঠার প্রস্তুতি চলছিল সে মুহূর্তে নিম্নচাপের প্রভাবে দেশজুড়ে বৃষ্টিপাত উৎপাদনেও বিসংবাদ ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আমরা আশা করব পিয়াজের অগ্নিমূল্য রোধে ভারতের বাইরে যেসব বিকল্প উৎস আছে সেসব দেশ থেকেও আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হবে।  পাশাপাশি সাংবার্ষিক সংকট রোধে পিয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধি ও সংরক্ষণের বিষয়টিও কৃষি অধিদফতরের বিবেচনায় আসা উচিত। এ নিত্যপণ্যের জোগান বৃদ্ধি করতে হাইব্রিড পিয়াজ চাষের উদ্যোগ নেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে।  আমদানিনির্ভরতা কাটিয়ে উঠতে হতে হবে তত্পর।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর