শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ

উন্নয়নশীল দেশের হাতছানি

আগামী বছরই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পৌঁছাতে যে সক্ষমতা অর্জনের প্রয়োজন হয়, তা ইতিমধ্যে অর্জিত হওয়ায় এ-সংক্রান্ত প্রত্যাশা আরও জোরালো হয়ে উঠেছে। আশা করা হচ্ছে, স্বাধীনতার ৪৬তম বার্ষিকীর প্রাক্কালেই বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেবে জাতিসংঘ। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের তিনটি সূচকের সব কটিই বাংলাদেশ ইতিমধ্যে অতিক্রম করেছে। মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ সূচক ও অর্থনৈতিক সংকট সূচকের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা ইতিমধ্যে অর্জন করেছে বাংলাদেশ। তিনটি সূচকের যে কোনো দুটি পূরণ করলেই স্বল্পোন্নত দেশের খোলস ছেড়ে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে ওঠার যোগ্যতা অর্জিত হয়। বাংলাদেশ আগামী মার্চে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্টের ত্রিবার্ষিক সভায় স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পাওয়ার দাবি তুলে ধরবে। উন্নয়নশীল দেশের কাতারে ঠাঁই পাওয়া সময়ের ব্যাপার হলেও এজন্য বাংলাদেশকে বর্তমানে বিদ্যমান বেশকিছু সুবিধা হাতছাড়া করতে হবে। বিশেষত বাংলাদেশ উন্নত দেশগুলোয় যে শুল্কমুক্ত বাণিজ্যিক সুবিধা পাচ্ছে তখন তা আর থাকবে না। এ সমস্যার মোকাবিলা কীভাবে করা হবে, তা নির্ণয়ে জাতীয় টাস্কফোর্স গঠনের উদ্যোগ চলছে। স্মর্তব্য, জাতিসংঘের শর্তানুযায়ী, কোনো দেশকে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে হলে পরপর তিন বছর মাথাপিছু জাতীয় আয় (জিএনআই) ১২৪২ ডলার হতে হবে। এ মুহূর্তে বাংলাদেশের গড় মাথাপিছু আয় ১৬১০ ডলার। আর জাতিসংঘের শর্তানুযায়ী, মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচকে ১০০-এর মধ্যে ৬৬ বা তার বেশি অর্জন করতে হয়, বাংলাদেশের অবস্থান ৭০-এ। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যে সম্ভাবনা হাতছানি দিচ্ছে বাংলাদেশের সামনে, তা নিঃসন্দেহে একটি আশাজাগানিয়া ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন পূরণে একে আরও এক ধাপ অগ্রগতি হিসেবে অভিহিত করা যায়। তবে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যেসব সুবিধা ভোগ করছে তা হাতছাড়া হলে কীভাবে তা পুষিয়ে নেওয়া যাবে, সে বিষয়টিও একই সঙ্গে ভাবতে হবে। এ সমস্যা মোকাবিলার জুতসই কৌশল বের করার ক্ষেত্রেও সরকারকে সক্ষমতা দেখাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর