শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ওআইসির ইস্তাম্বুল ঘোষণা

সংকট নিরসনে অবদান রাখবে

জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার মার্কিন অপনীতির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত জরুরি সম্মেলনে ৫৭ সদস্যবিশিষ্ট ওআইসির পক্ষ থেকে পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে এ ব্যাপারে সমর্থন চাওয়া হয়েছে। জেরুজালেম পৃথিবীর তিনটি প্রধান ধর্মীয় সম্প্রদায় ইসলাম, খ্রিস্টান ও ইহুদিদের পবিত্র স্থান। মানব জাতির মিলন কেন্দ্র হিসেবেও অনেকাংশে বিবেচিত হয় জেরুজালেমের একটি উপাসনাগার। যেটি মুসলমানদের কাছে প্রথম কিবলা এবং তিনটি পবিত্রতম মসজিদের একটি হিসেবে স্বীকৃত। একই স্থাপনাটি ইহুদিদের সবচেয়ে পবিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ উপাসনাগার হিসেবে পরিচিত। খ্রিস্টানদের কাছেও স্থাপনাটির ধর্মীয় স্পর্শকাতরতা সর্বজনবিদিত। মুসলমান, খ্রিস্টান ও ইহুদিদের মধ্যে বিশ্বাসগত দ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও একই স্থাপনার তিনটি অংশকে তারা মসজিদ, গির্জা ও সিনাগগ হিসেবে ব্যবহার করছে শত শত বছর ধরে। মুসলিম, খ্রিস্টান ও ইহুদি রাষ্ট্র কাঠামোর আওতায় অতীতে স্থাপনাটির পবিত্রতা রক্ষায় সব পক্ষ মোটামুটিভাবে যত্নবান থেকেছে। জেরুজালেম নগরীর আলাদা মর্যাদা এবং স্পর্শকাতরতার বিষয়টি স্মরণ করে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের ওপর সব সময় প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের গত সাত দশকের অনুসৃত নীতি ছিল জেরুজালেম সম্পর্কে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নেবে। ইসরায়েল জেরুজালেমকে নিজেদের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা দিলেও বিশ্ব সমাজের আপত্তির মুখে এ ক্ষেত্রে এক পাও এতদিন এগোতে পারেনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেলআবিব থেকে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের ঘোষণা দিয়ে একটি মীমাংসিত বিষয়কে হঠাৎ করেই লণ্ডভণ্ড করার কাণ্ডজ্ঞানহীনতা প্রদর্শন করেন। যার অনিবার্য পরিণতিতে ফিলিস্তিনে অসন্তোষ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ওআইসির সম্মেলনে পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করে সংঘাত নয় বরং সমঝোতার পথই বাতলে দেওয়া হয়েছে। জেরুজালেম ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে মর্যাদা পেলে মধ্যপ্রাচ্যে সহাবস্থানের পরিবেশ সৃষ্টি হবে এবং সংঘাতের ইতি ঘটাতে তা অবদান রাখবে। শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, বিশ্বশান্তির জন্য এটি এখন সময়েরই দাবি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর