মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

শিক্ষকদের অনশন

সমস্যা নিরসনে উদ্যোগ নিন

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাজার হাজার সহকারী শিক্ষক বেতন বৈষম্য কমানোর দাবিতে শনিবার থেকে জাতীয় শহীদ মিনারে আমরণ অনশন করছেন। পৌষের হাড় কাঁপানো শীতে অনশন করতে গিয়ে ইতিমধ্যে বেশ কিছু শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এবং তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর সপ্তাহখানেক আগে শিক্ষকদের আমরণ ধর্মঘট নিঃসন্দেহে উদ্বেগের। বছরের এই সময় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বার্ষিক ফল প্রকাশ এবং নতুন বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত থাকার কথা। তার বদলে তারা অনশনে নেমেছেন বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে। দেশের ৬৪ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাড়ে ৩ লাখ শিক্ষকের আন্দোলন জনমনে উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে। বেতন বৈষম্য দূরীকরণের দাবি নিয়ে তারা দীর্ঘদিন যাবৎ সরকারের সঙ্গে দেনদরবার চালিয়ে আসছেন। তা বিবেচনায় না এনে কেন অনশনের দিকে তাদের ঠেলে দেওয়া হলো, সেই প্রশ্ন জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে। অনশনরত সহকারী শিক্ষকদের বক্তব্য— তাদের বেতন প্রধান শিক্ষকদের চেয়ে তিন ধাপ নিচে থাকতে পারে না। তিন দিন ধরে অনশন চলা সত্ত্বেও এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় দৃশ্যত কোনো প্রতিক্রিয়াই দেখায়নি। সন্দেহ নেই শিক্ষকদের অনশন নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সরকারও উৎকণ্ঠিত এবং এ ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনাও চলছে। তবে যে ব্যাপারে ত্বরিত সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন সেখানে সময় ক্ষেপণের কারণ কী, তা আমাদের বোধগম্য নয়। এ সময় ক্ষেপণ যে সরকারের সুনামকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে এ সহজ সত্যটি সংশ্লিষ্টদের অজানা থাকার কথা নয়। আমরা মনে করি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিটি যৌক্তিক এবং পানি ঘোলা না করে তা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া উচিত। পাশাপাশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যাতে শিক্ষাদানে ঠিকমতো সময় দেন তাও নিশ্চিত করতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষকদের অনেকেরই যোগ্যতা নিয়ে সংশয় রয়েছে। শিক্ষক নিয়োগে যে মহাদুর্নীতি ও অসততা চলছে তার অবসানে আলাদা কর্মকমিশন নিয়োগের কথা ভাবতে হবে। সত্যিকারের যোগ্যরা যাতে প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান তা নিশ্চিত করাও সময়ের দাবি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর