বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

মুমিনদের জন্য উত্তম আদর্শ রসুল (সা.)

মুহম্মাদ ওমর ফারুক

মুমিনদের জন্য উত্তম আদর্শ রসুল (সা.)

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মানব জাতির জন্য অনুকরণীয়। স্বয়ং আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য রসুলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ (সূরা আজহাব আয়াত-২১)

আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, ‘হে বিশ্বনবী মুহাম্মদুর রসুলুল্লাহ (সা.) নিঃসন্দেহে আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী।’ রসুলুল্লাহ (সা.)-এর সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহতায়ালা সনদ দিচ্ছেন যে, তিনি (সা.) হলেন, উত্তম চরিত্রের অধিকারী এবং দুনিয়ার সব মানবমণ্ডলী যে মহামানবকে আদর্শের একমাত্র মাপমাঠি হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। প্রায় ১৪শ বছর আগে দুনিয়া পথভ্রষ্টতা ও মূর্খতার অন্ধকারে ছিল নিমজ্জিত। সে সময় মক্কার ঊষর প্রান্তরে আবির্ভূত হয়েছিলেন হেদায়েতের বাতিঘর প্রিয় নবী। হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আবির্ভাবে পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ নবুওয়তের নূরের আলোকে উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছিল। মাত্র ২৩ বছরের স্বল্পকালীন নবুয়তি জীবনে তিনি মানব জাতিকে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতির এমন উচ্চশিখরে উন্নীত করেছিলেন যে, বিশ্বের ইতিহাসে তার কোনো তুলনা খুঁজে পাওয়া যায় না। মানুষের কল্যাণ, হেদায়েত ও মুক্তির যে মশাল তিনি মুসলমানদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন, তার বদৌলতে তারা উন্নতি ও অগ্রগতির পথে অগ্রসর হয়েছিল। মুসলমানদের কাছে সব বিরুদ্ধ শক্তি পরাভূত হয়ে পড়েছিল। এটা এক বাস্তব সত্য। এতকিছু সত্ত্বেও মুসলমানদের ইতিহাসে এমন কিছু বেদনাদায়ক উপাখ্যান রয়েছে, যার উল্লেখ কিছুতেই সুখের বিষয় নয়। মুসলমানদের একাংশের বর্তমান কার্যকলাপের মাধ্যমেও আমাদের অতীত ইতিহাসের ওপর কলঙ্ক লেপন করা হচ্ছে। আমাদের সম্মানিত বুজুর্গান, পূর্ব পুরুষের সুবর্ণ উজ্জ্বল কার্যকলাপকে মলিন করে দিচ্ছে। আমাদের দেড় হাজার বছরের ইতিহাস অত্যন্ত গৌরবোজ্জ্বল হলেও বর্তমানে কার্যকলাপের প্রতি লক্ষ্য করলে লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যায়। বর্তমানে আমরা অবমাননা এবং লাঞ্ছনার সম্মুখীন। আমাদের চারিত্রিক সৌন্দর্য তথা আমল আখলাকের মধ্যে আন্তরিকতার কোনো ছাপ নেই। সব প্রকার মন্দ কাজে আমরা নিয়োজিত এবং সব প্রকার কল্যাণ থেকে বহুদূরে অবস্থান করছি। ভিন্ন ধর্মের অনুসারীরাও আমাদের অধঃপতন দেখে অবাক হচ্ছে। তারা আমাদের দুর্বলতা এবং দুরবস্থাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে।

শুধু তাই নয়, আমাদের প্রিয় সন্তান-সন্ততিরাও আজ ইসলামী জীবন ব্যবস্থা থেকে দূরে। বিস্ময়ে অবাক হতে হয় যখন দেখি যে জাতি একদিন বিশ্বের মানুষের তৃষ্ণা নিবারণ করেছিল, যারা সংস্কৃতির শিক্ষা দিয়েছিল তারা আজ অপরের মুখাপেক্ষী। কেন তাদের এ ধরনের অধঃপতন? জাতির সত্যিকার কল্যাণকামীরা অনেকদিন আগেই আমাদের এসব দুরবস্থা সম্পর্কে সচেতন করেছিলেন। কিন্তু আমাদের বোধোদয় হয়নি।

বর্তমানে আমরা যে চরম অধঃপতনের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছি তা থেকে সরে না এলে আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। এমন ক্রান্তিকালে আমরা যদি সঠিক পথে ফিরে না আসি তা হবে ক্ষমাহীন অপরাধের শামিল। বর্তমানে অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পরিত্রাণের উপায় চিন্তা করার আগে অধঃপতনের সম্মুখীন হওয়ার কারণসমূহ খতিয়ে দেখতে হবে। ফিরে যেতে হবে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশিত পথে।

            লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর