বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

তৈল দীর্ঘজীবী হোক

মাকিদ হায়দার

তৈল দীর্ঘজীবী হোক

মহাপাধ্যায় হর প্রসাদ শাস্ত্রী মহোদয় ‘তৈল’ নামে একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন গত শতকে। সুখপাঠ্য নিবন্ধটিতে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘তৈল’ একটি স্নেহজাতীয় পদার্থ’, ওই পদার্থটির বহুবিধ ব্যবহারের কথা। তৈল যত্রতত্র না দিয়ে যথাস্থানে প্রয়োগ করতে পারলেই রাম রহিম অনায়াসেই ওপরের দিকে যেতে পারে এবং কোথায় কখন কীভাবে তৈল প্রয়োগ করতে হয় সেটি যিনি জানেন তার জীবনের চলার পথে বাধা বিপত্তিতো হবেই না, বরং সুষম করে দেবে কণ্টকময় পথ।

আমাদের এ ঢাকা শহরের বেইলি রোডে বিখ্যাত সাংবাদিক এবং স্বাধীন বাংলা বেতারের জনপ্রিয় চরমপত্রের লেখক কথক, এম আর আখতার মুকুল খুলেছিলেন একটি বইয়ের দোকান। দোকানটির নামও দিয়েছিলেন তার পুত্রের নামে ‘সাগর পাবলিশার্স’। এম আর আখতার মুকুলের ওই বইয়ের দোকানে যত বই বিক্রি না হতো তারচেয়ে বেশি হতো আড্ডা বৈকালিক আড্ডায় প্রায়শই দেখতাম বিশিষ্ট আবৃত্তিকার অভিনেতা গোলাম মুস্তাফা, কবি-নাট্যকার জিয়া হায়দার, বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রযোজক কলকাতার বহুরূপী ন্যাটদলের বিশিষ্ট অভিনেতা মোহাম্মদ জাকারিয়া, যিনি জন্মভূমি ছেড়ে ঢাকায় স্থায়ী বাসিন্দা হয়েছিলেন গত শতকে। গত শতকের সত্তর দশকে নাট্যামোদীদের জন্য নতুন কিছু নাটক উপহার দিয়েছিলেন নাগরিক নাট্য সম্প্রদায় এবং থিয়েটার। থিয়েটারের প্রাণপুরুষ রামেন্দু মজুমদার, আবদুল্লাহ আল মামুন, ফেরদৌসী মজমুদার, কেরামত মাওলা, অভিনেতা খায়রুল আলম সবুজ, রেখা আহমদ, ঝুনা চৌধুরী, মিতা চৌধুরীসহ অসংখ্য নাট্যকর্মী প্রায়শই বৈকালিক আড্ডায় সমবেত হতেন মুকুল ভাইয়ের সাগর পাবলিসার্সে। আমি ও সবুজ যেতাম মুকুল ভাইয়ের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা শুনতে। তিনি এক বর্ষণমুখর সন্ধ্যায় আমাদের শুনিয়েছিলেন তার পিতা প্রখ্যাত লেখক এবং পুলিশের কর্মকর্তা সাদত আলী আখন্দের কাহিনী। তিনি পুত্রকে শুনিয়েছিলেন তেলের মাহাত্ম্য কত প্রকার এবং কী কী। সেই বর্ষণমুখর সন্ধ্যায় আমি আর সবুজ অভিভূত হয়ে শুনেছিলাম, কখনো বাংলায় কখনো হিন্দিতে মুকুল ভাই রসিয়ে রসিয়ে বলছিলেন তার পিতার বসের কাহিনী। গত শতকে দিনাজপুরে আমাদের বস ছিলেন এক পাঞ্জাবি দারোগা। দেখলেই ভয় করত। নাম ছিল হরবন্ত সিং। তিনি ব্রিটিশের অধীনে চাকরি পেয়েছিলেন পুলিশের সিপাই হিসেবে। লেখাপড়া ছিল ক্লাস টু-থ্রি পর্যন্ত।

সুদর্শন হরবন্ত সিং পাঞ্জাবি আর হিন্দি ভাষা ছাড়া দু-একটি ইংরেজি শব্দ জানতেন। তখন বেঙ্গল রেজিমেন্টের পুলিশের প্রধান কার্যালয় ছিল জলপাইগুড়িতে। নাতিশীতোষ্ণ জলপাইগুড়ির অধীনে ছিল দিনাজপুর, রংপুর, দার্জিলিং, বগুড়াসহ শিলিগুড়ি, ময়নাগুড়ি। বহুদিন আগে ইংরেজ সরকার রংপুর থেকে প্রশাসনিক কার্যক্রম জলপাইগুড়িতে স্থানান্তর করেছিল। পূর্ববঙ্গের রংপুরের চেয়ে জলপাইগুড়ি নাতিশীতোষ্ণ হওয়ায় পুরো প্রশাসনকে নেওয়া হয়েছিল জলপাইগুড়িতে। ব্রিটিশ আমলে পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন জেলায় একজন বড় দারোগার সঙ্গে দুজন সিপাই এবং বাহন হিসেবে থাকত ঘোড়া। কোথাও কোনো চুরি ডাকাতি খুন-খারাবি হলে দারোগাসহ ওই দুজন সিপাই ছিল যথেষ্ট। কোনো গ্রামে যদি কোনো দারোগা পুলিশ ঢুকত সে গ্রাম নাকি মুহৃর্তের ভিতরেই শূন্য হয়ে যেত। ইংরেজ আমলের পুলিশ প্রশাসনের ওপর অর্পিত দায়িত্ব এবং তাদের কর্তব্যবোধ সম্পর্কে পূর্ব এবং পশ্চিম বাংলার মানুষেরা জানতেন। পুলিশ দারোগাদের ক্ষমতার উৎস ইংরেজ সরকার। ইংরেজ পুলিশ সুপার থাকতেন জলপাইগুড়িতে। তিনি ছিলেন মি. হরবন্ত সিংয়ের সরাসরি বস। মি. সিং তার জীবনে পুলিশের অনেক অফিসারকে দেখেছেন তাদের ঘোড়ায় চড়তে, সন্তরণ করতে, এমনকি মদ্যপানসহ স্বদেশি মেয়েদের প্রতিও তাদের ছিল লোভনীয় দৃষ্টি। তবে জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার সবচেয়ে বেশি পছন্দ করতেন পূর্ববঙ্গের মৌসুমি ফল। বিশেষত দিনাজপুরের লিচু এবং আম ছিল তার পছন্দের প্রথম তালিকায়। একদিন জলপাইগুড়ি থেকে এক সিপাই এসে একটি ইংরেজিতে লেখা চিঠি হরবন্তের হাতে দিয়ে বললেন, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে পুলিশ সুপারকে দিনাজপুরের ভালো আম এবং কয়েক ঝুড়ি লিচু পাঠাতেই হবে। পুলিশ সুপার স্যার ওই লিচু আর আম নিয়ে কলকাতায় যাবেন বড় লাট সাহেবের বাড়িতে। জলপাইগুড়ি থেকে আগত সিপাইকে বিদায় দিয়ে দারোগা মি. সিং চিঠিটা না পড়েই সাদত আলী সাহেবকে ডেকে বললেন— চিঠি ভালো করে পড় বার তিন-চারেক। তারপর আমাকে বুঝিয়ে দাও বড় স্যার কী লিখেছেন ওই চিঠিতে। মি. সিংয়ের অধীনে তখন সাদত সাহেব ছিলেন জুনিয়র অফিসার পদে। তবে তিনি ইতিমধ্যে বিএ পাস করেছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সেই প্রেক্ষিতে তিনি খুব ভালো ইংরেজি জানতেন।

চিঠি পাঠান্তে আখন্দ সাহেব জানিয়েছিলেন জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপারের চিঠির বৃত্তান্ত। আগামী দুই-তিন দিনের ভিতরে আম-লিচু এবং একটি ইংরেজিতে ভালো করে লেখা চিঠি নিয়ে একজন সিপাইকে জলপাইগুড়িতে পাঠাতে হবে। মি. সিং বললেন, শুনেছি আখন্দ তুমি নাকি বিএ পাস করেছ। পরদিন দিনাজপুরের সবচেয়ে সুস্বাদু আম-বম্বে লিচু ঝুড়িতে উঠানোর পরে মি. সিং আখন্দ সাহেবেকে বললেন খুব ভালো করে ইংরেজি একটি চিঠি লিখে এনে আমাকে পড়ে শোনাও কী লিখেছ চিঠিতে।

আখন্দ সাহেব জানতেন তার বসের শিক্ষার জোর, তবু তিনি তার বস। তার বসের আদেশ শিরধার্য ভেবে প্রায় আধাঘণ্টা পরে চিঠি লিখে আখন্দ সাহেব নিয়ে এলেন। সেই লিচু, আমের ঝুড়ির বস্তার ওপর জলপাইগুড়ির সেই পুলিশ সুপারের নাম লিখতে হলো আখন্দ সাহেবকে। ওনার হাতের লেখা দেখে খুবই খুশি হয়ে মি. সিং বললেন, আমাকে পড়ে শোনাও ইংরেজিতে কী চিঠি লিখেছ আমার স্যারকে।

শুরু হয়েছিল চিঠিটি ‘ডিয়ার স্যার’ সম্বোধন করে। চিঠিটি শেষ হলেও আর কোথাও ‘স্যার’ উল্লেখ না থাকায় মি. সিং হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে বললেন, আখন্দ তুমি লেখাপড়া না ছাই শিখেছ, চিঠি আবার লিখে নিয়ে এসো। পত্রলেখক আগের চেয়ে আরও কঠিন ইংরেজি লিখলেও সেই সম্বোধনই রেখেছিলেন ‘ডিয়ার স্যার’। পরে আর কোথাও ‘স্যার’ শব্দটির প্রয়োগ না থাকায়, এবার মি. সিং ভীষণ ক্ষিপ্ত হয়ে জানালেন আরে ভাই তোমাকে একটি কথা বলি মনে রেখ, সারাজীবন এই আমি হরবন্ত সিং লেখাপড়া করেছি টু-থ্রি অব্দি। পিতা দিনমজুর ছিলেন, তাই পড়ালেখা করতে না পারলেও আমি আজ দিনাজপুরের দারোগা হয়েছি। কেমন করে হয়েছি সেই কাহিনী বলছি তোমাকে। যদি ভবিষ্যতে প্রমোশন পেতে চাও উঠতে-বসতে ‘স্যার’ শব্দটিকে ব্যবহার করবে। এই তুমি, তোমার চিঠিতে একবার মাত্র স্যার শব্দটিকে ব্যবহার করেছ, আবার তুমি নতুন করে চিঠি লিখে নিয়ে এসো। আমি শুনতে চাই প্রতি দুই লাইন পর পর স্যার শব্দটি। স্যার স্যার বলেই তো আজ আমি দারোগা হয়েছি। আখন্দ সাহেব চিঠিতে অনেকবার স্যার লিখে আনার পর মি. সিং বলেছিলেন স্যার শব্দটি হলো ওপরে ওঠার সিঁড়ি এবং উত্কৃষ্ট তৈল মর্দন। যতবার আমাকে স্যার স্যার বলবে, ভবিষ্যতে ততই তোমার উজ্জ্বল হবে। পরবর্তীতে সাদত আলী আখন্দের লেখা পুলিশ জীবনের একটি সুখ পাঠ্যবই পাঠকদের তিনি উপহার দিয়েছিলেন। বইটির নাম ‘তেরো নম্বরে পাঁচ বছর’ প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৬৯ সালে। লেখক তখন কর্মরত ছিলেন গোয়েন্দা বিভাগে।

অভিনেতা সবুজ মুকুল ভাইকে জানালেন, স্যার শব্দটির প্রয়োগ হয়েছে হর প্রসাদ শাস্ত্রীর তেলের মতোন। মুকুল ভাই মাথা নেড়ে জানালেন যদি দিনাজপুর থেকে বাঁশ পাঠাতেন ওই পুলিশ সাহেবকে তখন হয়তো মি. সিং তার ইংরেজ বসকে লিখতেন ডিয়ার স্যার— দিনাজপুরের উত্কৃষ্ট বাঁশ পাঠালাম। সেই দিনের সেই বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যায় এম আর আক্তার মুকুলের উচ্চমাপের রসিকতার কথা এখনো মনে আছে। সেই সঙ্গে মনে আছে বাঁশ কাকে কখন দেওয়া যাবে, যদিও বাঁশ একটি তৃণ জাতীয় গাছ। অন্যান্য তৃণের সঙ্গে যথেষ্ট পার্থক্য থাকলেও সব বাঁশই শক্ত, সহজে ভাঙতে চায় না, তাই গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে বাঁশ দিয়ে খুঁটি দেওয়া, বেড়া বানানো, ঘরে পাকা বাঁশের আড়া দেওয়া, হস্ত কুটির শিল্পের সবচেয়ে বড় উপাদান ওই বাঁশ। সাজ সরঞ্জাম, চেয়ার টেবিল শৌখিন দ্রব্য তৈরি হয়ে থাকে, দেশের বাইরে নাকি বাঁশ রপ্তানি হয়ে থাকে, আমদানিকারকরা নাকি বাংলাদেশের বাঁশ আমদানি করে, সেই বাঁশ অন্যকে দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন বলে শুনেছি। সোফা, খাট এবং বাঁশের শো পিস দেশে-বিদেশে খুবই সমাদৃত আজকাল।

বাঁশ থেকে লাঠিও হয়, আবার বাঁশিও হয়। বাঁশের লাঠি হাতে নিয়ে চর দখল করতেও দেখেছি পাবনা শহরের দক্ষিণ দিকের ঘোষপুরের চরে। তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা বাঙালির জীবনের স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি ইতিহাস। বাঁশের লাঠি দিয়ে জনতাকে প্রতিরোধ করতেও দেখেছিলাম। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক সমাবেশে আমরা বাঁশের লাঠি হাতে নিয়ে যারা সমবেত হয়ে ছিলাম রেসকোর্স ময়দানে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন— ‘যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুকে মোকাবিলা করতে হবে।’ রেসকোর্সে আমরা যারা উপস্থিত ছিলাম তখন আমাদের হাতে ছিল বাঁশের লাঠি, সেই লাঠিই পরিণত হয়েছিল রাইফেলে। সেদিন সবার মাথার ওপরে উঁচিয়ে ধরেছিলাম বাঁশের লাঠি। আমাদের জাতীয় কবি নজরুলের ‘মোর এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী অন্য হাতে রণতূর্য’। নজরুলের জন্মের বহু আগে কবি যতীন্দ্র মোহন বাগচি (জন্ম ২৭-১১-১৮৭৮, মৃত্যু ০১-০১-১৯৪৮) লিখেছিলেন তার বিখ্যাত কবিতা ‘কাজলাদিদি’। সেই কবিতাতে পড়েছিলাম ‘বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ঐ’। অপরদিকে শচিন দেব বর্মণের বিখ্যাত গান ‘বাঁশি শুনে আর কাজ নেই, সেতো ডাকাতিয়া বাঁশি’। যা হোক বাঁশের ব্যবহার যে বহুমাত্রিক বলাই বাহুল্য। কিন্তু বাঁশের অপব্যবহারও কম নয়। বাঁশ দিয়ে মানুষ, সাপ দুটোই মারা যায়।

আজকাল ভবন নির্মাণে রডের বদলে বাঁশের চটা ও কঞ্চি দিয়ে সরকারি ভবন নির্মাণ করছেন সরকারের বিভিন্ন সংস্থার প্রকৌশলী- ঠিকাদারের যোগসাজশে। গত ১৯ মার্চ ২০১৭ এর বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় দেখলাম, বান্দরবান সরকারি কলেজের একাডেমিক ভবনে বাঁশের কঞ্চি ব্যবহারের সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ভবনটির ছাদে ওই তৃণ জাতীয় গাছটিকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তবে ঠিকাদারদের নাম বলতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন কর্তৃপক্ষ। হয়তো ঠিকাদার সাহেব বৃহৎ কোনো দলের সমর্থক, চাঁদা প্রদানকারী। তবে ভবন নির্মাণ কাজ তদারকি করছিলেন ঠিকাদার উজ্জ্বল কুমার দাস ও তাপস কান্তি দাস। তারা বড় একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই বোধ করি নাম বলতে অপারগ ছিলেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ওই দুই দাস বাবুর হয়তো কোনো শাস্তিই হয়নি। যেহেতু ওরা দুজনেই বটবৃক্ষের ছায়ার নিচে আছেন। ওরা হয়তো হর প্রসাদ শাস্ত্রী মহোদয়ের সেই ‘তৈল’ নামক প্রবন্ধটি একাধিকবার পাঠ করেছিলেন এবং যথারীতি তৈল দিয়ে যাচ্ছেন প্রশাসনের বিভিন্ন শাখা প্রশাখায়। অতএব ছাদে রডের বদলে বাঁশ দিলেও দাসদ্বয়ের এবং ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের কিছুই হবে না— তারা সেটি ভালো করেই জানেন। যেহেতু রাজনৈতিক শক্তি, অর্থ এবং সেই তৈল সঙ্গে আছে। হাতে-পায়ে দিলেই অপরাধ, অপরাধ বলে আর গণ্য হবে না।

মুকুল ভাই সেই বর্ষণমুখর সন্ধ্যায় আরও জানালেন, স্যার শব্দটির ভিতরে লুকিয়ে আছে অদৃশ্য তৈল। সেই তেলের প্রয়োগ হতে পারে মাথায়, পৃষ্ঠদেশে। যিনি যত দিতে পারবেন, তিনি তত ওই হরবন্ত সিংয়ের মতো ওপরে উঠতে পারবেন। তবে কেউ যদি বসদের নিয়মিত তৈল দেন সেটি যদি বস বুঝতে পারেন, তাতে বসের আনন্দ প্রবাহিত হয় চোখে মুখে। আর যদি কোনো বসকে চোর, ঘুষখোর, মদ্যপ এবং নারীসংক্রান্ত দুষ্ট কথা বলেন, তাহলে জীবনে তার সরকারি চাকরিতে প্রমোশন তো হবেই না, হবে ডিমোশন। আমি আর সবুজ ইচ্ছাকৃতভাবে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে তৈলের গুণ নির্ণয় করতে করতে ফিরেছিলাম মালিবাগের বাসায়। তৈল দীর্ঘজীবী হোক।

লেখক : কবি।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর