বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আলু বিসংবাদ

রপ্তানির উদ্যোগ নিন

গত বছর চাহিদার চেয়ে ২০ লাখ টন বেশি আলু উৎপাদন করে বিপাকে পড়েছেন আলুচাষি, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিকরা। বিশেষ করে হিমাগার মালিকরা তাদের কাছে মজুদ আলু নিয়ে সংকটে ভুগছেন। ক্রয়কৃত দামের এক চতুর্থাংশ দামেও পুরনো আলু বিক্রি করা কঠিন হয়ে পড়ছে। দেশে আলুর বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৮০ লাখ টন। চলতি বছর আলু উৎপাদন হয়েছে প্রায় এক কোটি টন। ২০ লাখ টন আলু উদ্বৃত্ত থেকে যাওয়ায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং হিমাগার মালিকদের আম ও ছালা দুটোই হারাবার উপক্রম হয়েছে। এরই মধ্যে নতুন আলু এসে গেছে বাজারে। ফলে পুরনো আলু বিক্রি করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে। গত পাঁচ মাস ধরে বাজারে শাক-সবজির উচ্চমূল্য বিরাজ করলেও প্রত্যাশার চেয়ে দাম কম থাকায় আলু বাজারজাত করেনি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। মৌসুম শেষে হিমাগারে সংরক্ষিত ৫৩ লাখ টন আলুর মধ্যে ১৯ থেকে ২০ লাখ টন আলু অবিক্রীত থেকে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন হিমাগার মালিকরা। আলু সংরক্ষণ করতে গিয়ে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বাবদ তারা যে কয়েকশ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়েছেন তা পরিশোধ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ অবস্থার মোকাবিলায় হিমাগার মালিকরা ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন করে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আবেদন করেছেন। চাহিদার তুলনায় ২০ লাখ টন বেশি আলু উৎপাদন হওয়ায় আলু মজুদ রেখে চলতি বছর লাভের সম্ভাবনা ছিল আদতেই কম। কিন্তু আলু ব্যবসায়ী এবং হিমাগার মালিকরা সে বাস্তবতাকে অগ্রাহ্য করে মজুদ আলু বাজারে ছাড়ার ব্যাপারে রক্ষণশীল নীতি গ্রহণ করায় তাদের এখন খেসারত দিতে হচ্ছে। দেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আলু উৎপাদন বিপুলভাবে বেড়েছে। দুনিয়ার অনেক দেশে আলু প্রধান খাদ্য হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশ শীর্ষস্থানীয় আলু উৎপাদনকারী দেশ হলেও আলুর বহুমুখী ব্যবহার না থাকায় বাড়তি উৎপাদন সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রাখতে আলু রপ্তানির বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হবে। পাশাপাশি আলুকেন্দ্রিক খাদ্যপণ্য উৎপাদনের শিল্প স্থাপনেও উদ্যোগ নিতে হবে। মূল খাদ্য হিসেবে আলু ব্যবহারের কথাও ভাবা যেতে পারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর