রিদ্দা যুদ্ধে তার অসামান্য কৃতিত্বের জন্যই ভন ক্রেমার বলেছেন, “খালিদের সাহস ও আবু বকরের বিজ্ঞতা ছাড়া সেদিন (রিদ্দা যুদ্ধে) ইসলামের শত্রুরাই বিজয়ী হতো।’ শুধু রিদ্দা যুদ্ধেই নয়, আবু বকরের (রা.) শাসনামলে সাম্রাজ্য সম্প্রসারণের ক্ষেত্রেও তিনি গৌরবময় ভূমিকা পালন করেছিলেন। ইসলামের একজন দিগ্বিজয়ী যোদ্ধা হিসেবে পারস্য বাহিনীকে পরাজিত করে তিনি হীরা দখল করেন। আজনাদাইনের যুদ্ধে তিনি রোমানদের পরাজয় বরণ করতে বাধ্য করেছিলেন। সিরিয়ার দামেস্ক আরদান, হি্মস প্রভৃতি জয়ের কৃতিত্বও তার প্রাপ্য। এককথায় নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, ইসলামের প্রাথমিক পর্যায়ে যখন বিপক্ষ দল একে ধ্বংস করার জন্য বার বার আঘাত হানছিল, তখন খালিদের মতো সাহসী, রণকৌশলী ও দক্ষ সমরনায়ক ছাড়া ইসলামের গৌরব রবিকে চতুর্দিক থেকে পরিব্যাপ্ত করা সম্ভব হতো না।
হজরত ওমরের রাজত্বকালে দিগ্বিদিকে ইসলামী সাম্রাজ্যের বিস্তৃতির জন্য খালিদ-বিন-ওয়ালিদ অসাধারণ নৈপুণ্য ও বীরত্ব প্রদর্শন করেছিলেন। ৬৩৬ খ্রিস্টাব্দে ইয়ারমুকের যুদ্ধে তিনি রোমানদের চূড়ান্তভাবে পরাজিত করেন। রোমানদের বিরুদ্ধে তার অসামান্য বীরত্ব, নৈপুণ্য, বীর্যবত্তা তাকে হ্যানিবল, সিজার ও নেপোলিয়নের মতো বিশ্ববিখ্যাত বীরের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছে। ইসলামের যুদ্ধজয়ের ইতিহাসে মহাবীর খালিদ একজন চিরঞ্জীব সমরনেতা।
সিরিয়ার মুসলিম কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পর খালিদ সেখানকার শাসনকর্তার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। রণাঙ্গনের মতো শাসনকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রেও তিনি তার অসামান্য প্রতিভার পরিচয় দিয়েছিলেন। আশ্চর্য রাজনৈতিক দক্ষতায় শান্ত ও অশান্ত উভয় পরিস্থিতিকেই তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন। তার চরিত্র নানাবিধ মানবিক গুণে বিভূষিত ছিল কিন্তু তার শাসনকাল দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।শাকিলা জাহান।