শনিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

চিকিৎসকদের সুমতি হোক

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা প্রশংসনীয়

দেশের চিকিৎসাসেবা এখনো রাজধানী ঢাকাসহ বড় বড় নগরকেন্দ্রিক। গ্রামপর্যায়ে চিকিৎসাব্যবস্থায় হতশ্রী অবস্থা বিরাজ করছে। উপজেলা পর্যায়ে কাউকে চিকিৎসক হিসেবে নিয়োগ দিলে যেভাবেই হোক তিনি ঢাকা বা বড় কোনো নগরে থাকার চেষ্টা করেন। বাধ্য হয়ে কেউ উপজেলা পর্যায়ে বদলি হলেও ডিউটি করেন খাতা-কলমে। অধিকাংশ সময় থাকেন বাইরে। ফলে দেশের গ্রামাঞ্চলের মানুষ মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। স্বাস্থ্য খাতে সরকার শত শত কোটি টাকা ব্যয় করলেও তা কোনো কাজে আসছে না। যারা সরকারি চিকিৎসক পদে নিয়োগ পান তাদের সিংহভাগই সরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে উত্তীর্ণ হয়ে চিকিৎসা পেশায় এসেছেন। তাদের চিকিৎসাবিষয়ক পড়াশোনার ৯৫ শতাংশ খরচ হয়েছে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে। অথচ যে জনগণের ট্যাক্সের টাকায় তারা চিকিৎসক হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন, তাদের প্রতি দায়বোধ না থাকায় সেবার বিষয়টি উপেক্ষিত হয়। সরকারি চাকরিতে দেশের যে কোনো স্থানে নিয়োগের শর্ত থাকলেও উপজেলা পর্যায়ে যারা নিয়োগ পান তারা তা পাশ কাটাতে শুরু করেন অপতত্রতা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার তার কার্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে সরকারি চিকিৎসকদের উপজেলায় দায়িত্ব পালনে যে অনীহা রয়েছে সেদিকে দৃষ্টিপাত করে বলেছেন, চিকিৎসকদের যদি ঢাকাতেই থাকার ইচ্ছা হয় তাহলে তাদের সরকারি চাকরির প্রয়োজন নেই। তারা রাজধানীতে থেকে প্রাইভেট রোগী দেখে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন। তাদের চাকরি ছেড়ে দিয়ে বাড়ি যাওয়াই ভালো। দয়া করে তারা বিদায় নিয়ে বাড়ি চলে যান, তাদের স্থানে নতুন নিয়োগ দেওয়া হবে। দেশের চিকিৎসকদের একাংশের মধ্যে দায়বোধের যে ঘাটতি রয়েছে, সে পথ থেকে তাদের সরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য অবদান রাখবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোয় যারা নিয়োগ পান তারা তাদের দায়িত্ব পালনে যাতে অনীহা না দেখান, তা নিশ্চিত হওয়া দরকার। চিকিৎসকদের পদোন্নতিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে উপজেলা পর্যায়ে কাজের রেকর্ড যাতে বিশেষ গুরুত্ব পায়, সেদিকেও নজর দিতে হবে। দেশের গ্রামগঞ্জের নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চিকিৎসকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তাদের সুমতি ফেরাবে আমরা এমনটিই আশা করতে চাই।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর