রবিবার, ৭ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
ইতিহাস

মালব রাজ্য

১৩১০ খ্রিস্টাব্দে আলাউদ্দিন খলজি মালব অধিকার করেন এবং তখন থেকে ১৪০১ সাল পর্যন্ত এটা প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের দ্বারা শাসিত হয়। অতঃপর মুহাম্মদ ঘুরির বংশধর ও তদানীন্তন শাসনকর্তা দিলওয়ার খান স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। দিলওয়ার খানের পর তার পুত্র হুসাং খান সিংহাসন অধিকার করে মণ্ডুতে রাজধানী স্থানান্তরিত করেন। গুজরাটের মুজাফ্ফর শাহ তাকে পরাজিত ও বন্দী করেন। কিছুকাল পরই তিনি নিজের রাজ্য ফিরে পান। তার অপদার্থ পুত্র সিংহাসন লাভ করার পর স্বীয় মন্ত্রী কর্তৃক নিহত হন। মন্ত্রী মাহমুদ খান ছিলেন খলজি বংশীয় একজন তুর্কি। ১৪৩৬ সালে তিনি জোরপূর্বক সিংহাসন অধিকার করেন। মাহমুদ খান একজন বিখ্যাত যোদ্ধা ও সেনাপতি ছিলেন। তিনি গুজরাটের শাসনকর্তা ও মেবারের রানা কুম্ভের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। বাহমনী রাজ্যের বিরুদ্ধেও তিনি যুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন। ভারতের বাইরেও তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল। মিসরের খলিফা তার সুলতানি মর্যাদাকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। এই সময়ে মালবের সর্বাঙ্গীণ উন্নতি সাধিত হয়। তিনি ছিলেন ন্যায়বান ও উদার শাসক। তার রাজত্বকালে হিন্দু ও মুসলমান পাশাপাশি সুখে ও শান্তিতে বসবাস করত। পরে সুলতান গিয়াসউদ্দিন ছিলেন শান্তিপ্রিয়। অল্পকাল পরই তার পুত্র নাসিরউদ্দিন তাকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করে ১৫০০ সালে সিংহাসনে আরোহণ করেন। দ্বিতীয় মাহমুদ ছিলেন এই বংশের শেষ স্বাধীন সুলতান। তার সময় মালবের রাজপুতদের আধিপত্য বেড়ে যায়। রাজপুত সরদার মেদিনী রায়কে তিনি মন্ত্রী নিযুক্ত করেন। মেদিনী রায় রাজ্যে বিশেষ খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন। এই মন্ত্রীর ধ্বংস সাধনের জন্য মুসলিম অভিজাতরা গুজরাটের দ্বিতীয় মুজাফ্ফর শাহের কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন জানান। মেদিনী রায় চিতোরের রানা সঙ্গের সাহায্যে মাহমুদকে পরাজিত ও বন্দী করেন। কিন্তু মাহমুদ শাহ অল্পকালের মধ্যেই নিজের রাজ্য ফিরে পান। তিনি অবিলম্বে রানা সঙ্গের রাজ্য আক্রমণ করলেন। রানার মিত্র গুজরাটের বাহাদুর শাহ দ্বিতীয় মাহমুদ শাহকে আক্রমণ করে পরাস্ত করেন এবং ১৫৩১ খ্রিস্টাব্দে মণ্ডু অধিকার করে মালব গুজরাটের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। এভাবে মালবের স্বাধীনতার ইতিহাস শেষ হলো। গুজরাটের বাহাদুর শাহকে পরাজিত করে ১৫৩৫ সালে মোগল সম্রাট হুমায়ুন মালব অধিকার করেন। ১৫৪২ সালে শেরশাহ তা অধিকার করেন। অবশেষে ১৫৬১ সালে মালব আকবরের আয়ত্তাধীনে চলে যায়।

জাফর খান

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর