বুধবার, ১০ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

শিক্ষক না মস্তান

অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত হোক

কক্সবাজারে শিক্ষক নামের একদল মস্তানের হাতে নির্মমভাবে প্রহৃত হয়েছেন একজন অভিভাবক। তিনি তার পুত্রের পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে। পাশাপাশি বিদ্যালয়ে পূর্ব ঘোষণা ছাড়া ভর্তি ফি ও মাসিক বেতন কেন বাড়ানো হলো— জানতে চেয়েছিলেন। এর পরিণতিতেই কক্সবাজারের খরুলিয়া কেজি অ্যান্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুলের এক শিক্ষার্থীর বাবাকে বেদম প্রহার করেছেন ওই স্কুলের শিক্ষকরা। ওই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র শাহরিয়ার নাফিসের বাবা আয়াত উল্লাহ এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বোরহান উদ্দিনের কাছে অভিযোগ করলে দুজনের কথাকাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে বোরহান উদ্দিন পাশের খরুলিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল হককে ডেকে পাঠান। জহিরুল হক এসে আয়াত উল্লাহকে ধাক্কা মারেন। বোরহান উদ্দিনও হামলে পড়েন আয়াত উল্লাহর ওপর। দুজনের ধাক্কায় মাটিতে পড়ে যান আয়াত উল্লাহ। এরপর রশি দিয়ে তার হাত ও পা বেঁধে ফেলা হয়। দুই প্রধান শিক্ষকসহ তাদের সহযোগী শিক্ষকরা এ অবস্থায় আয়াত উল্লাহকে মারধর শুরু করেন। এ সময় জহিরুল হক ও বোরহান উদ্দিন আয়াত উল্লাহকে উপর্যুপরি লাথি মারেন। কেউ এই গুণ্ডামিপনার প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। প্রসঙ্গত, আয়াত উল্লাহ ঝিলংজা খরুলিয়া ঘাটপাড়ার মাওলানা কবির আহমদের ছেলে। তিনি পেশায় চিত্রশিল্পী। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে সাতজনের নামে মামলা করেছেন। কক্সবাজার সদর মডেল থানায় করা মামলার আসামিরা হলেন— খরুলিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল হক, খরুলিয়া কেজি অ্যান্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বোরহান উদ্দিন, শিক্ষক ওবাইদুল হক, নুরুল হক, নজিবুল্লাহ, আবদুল আজিজ ও দফতরি নুরুল হক। স্কুলের বেতন বৃদ্ধির প্রতিবাদ করায় একজন অভিভাবককে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন চালানো নজিরবিহীন ঘটনা। কক্সবাজার থানার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। শিক্ষার্থীর অভিভাবকের ওপর নির্যাতন চালানোর ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে খরুলিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কারণ দর্শাও নোটিস জারি করা হয়েছে। এ ঘটনা শিক্ষকদের ভাবমূর্তির জন্য কলঙ্ক বয়ে এনেছে। আমরা মনে করি, এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা নিশ্চিত করতে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর