শুক্রবার, ১২ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিশ্ব ইজতেমা

দ্বন্দ্ব-সংঘাত থেকে দূরে থাকতে হবে

টঙ্গীর তুরাগ তীরে আজ থেকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমা। ইতিমধ্যে লাখ লাখ মুসল্লির উপস্থিতিতে মুখর হয়ে উঠেছে ইজতেমা প্রাঙ্গণ। টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মুসলিম উম্মাহর দাওয়াতি কার্যক্রমের শীর্ষ মিলনমেলা হিসেবে ইতিমধ্যে পরিচিতি লাভ করেছে। গত কয়েক বছরের মতো এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুই পর্বে। প্রথম পর্ব শেষ হবে ১৪ জানুয়ারি। ওই দিন জোহরের নামাজের আগেই আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে ইজতেমার সমাপ্তি টানা হবে। এরপর চার দিন বিরতি শেষে ১৯ জানুয়ারি শুক্রবার থেকে ২১ জানুয়ারি রবিবার পর্যন্ত চলবে দ্বিতীয় পর্ব। আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা শেষ হবে। বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে শিল্পনগরী টঙ্গী সেজেছে নতুন সাজে। তুরাগ পাড়ে ইজতেমা উপলক্ষে ১৬০ একর এলাকাজুড়ে বিশাল প্যান্ডেল নির্মাণ করা হয়েছে। বিদেশি মেহমানদের জন্য নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। ইজতেমা ময়দানে মুসল্লিদের যাতায়াত সহজতর করতে সেনাবাহিনীর  ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা তুরাগ নদের ওপর নয়টি ভাসমান পন্টুন সেতু নির্মাণ করেছেন। মুসল্লিদের সুষ্ঠুভাবে মুরব্বিদের বয়ান শোনার জন্য ৩০০টি বিশেষ ছাতা মাইক স্থাপন করা হয়েছে। ইজতেমার নিরাপত্তা রক্ষায় সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ, র‌্যাব ও সাদা পোশাকধারী বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার হাজার হাজার সদস্য নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন। এ জন্য সর্বাধুনিক প্রযুক্তিগত ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমা মুসলিম জাহানে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করেছে। এ দেশের মানুষ যে সত্যিকার অর্থেই ধর্মভীরু বিশ্ব ইজতেমার মাধ্যমে তা প্রকাশ পেয়েছে। কাবাকেন্দ্রিক মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও সংহতি সুসংহতকরণেও বিশ্ব ইজতেমার অবদান অনস্বীকার্য। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভিকে নিয়ে ভারতে তাবলিগ জামাতের মধ্যে যে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে, তার অপছায়া বাংলাদেশেও অনুভূত হচ্ছে। তাবলিগের ওই মুরব্বির কিছু বিতর্কিত বক্তব্যের জন্য দেশের আলেম সমাজের এক বড় অংশ বিশ্ব ইজতেমায় তার অংশগ্রহণের বিরোধিতা করছেন। আমরা আশা করব, তাবলিগ জামাতের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে আলোচনার মাধ্যমে এ বিরোধের ইতি ঘটানো হবে।  হাড় কাঁপানো শীতকে উপেক্ষা করে ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমায় যেসব মুসল্লি অংশ নিয়েছেন, আমরা তাদের প্রতি মোবারকবাদ জানাচ্ছি। আল্লাহ তাদের সুস্থ রাখুন, এমনটিও কাম্য। সফল হোক বিশ্ব  ইজতেমা। দৃঢ়তর হোক বিশ্বাসী মানুষের ঐক্য।

সর্বশেষ খবর