শুক্রবার, ১২ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

আগুন পোহাতে গিয়ে দুর্ঘটনা

বিপদ এড়াতে সতর্কতার বিকল্প নেই

শীত নিবারণে আগুন পোহাতে গিয়ে রংপুর অঞ্চলে এ পর্যন্ত দগ্ধ হয়ে অন্তত সাতজনের মৃত্যু ঘটেছে। সারা দেশে একই কারণে অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনা খুব একটা কম নয়। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে এ মুহূর্তে রেকর্ডসংখ্যক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। যাদের সিংহভাগই শীত নিবারণে আগুন পোহাতে গিয়ে অসতর্কাবস্থায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে ট্র্যাজেডির শিকার হয়েছেন। আগুন পোহাতে গিয়ে বৃহত্তর রংপুরে যারা অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন তাদের সবাই নারী। রংপুর মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ৬৩ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন, যাদের মধ্যে ১৯ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শীত নিঃসন্দেহে সবচেয়ে আনন্দদায়ক ঋতু। গ্রীষ্মপ্রধান এই দেশে শীত মৌসুম প্রায় সবার জন্যই কাঙ্ক্ষিত। শীতের পিঠা ঐতিহ্যের অংশ বলে বিবেচিত এবং এ জন্য অনেকেই শীতের আগমন কবে ঘটবে সে জন্য মুখিয়ে থাকেন। নানা ধরনের সুস্বাদু সবজির জন্য শীত মৌসুম ভোজন রসিকদের জন্যও খুব প্রিয়। কিন্তু শীত গরিব-দুঃখী মানুষের জন্য কষ্ট বয়ে আনে শীতের পোশাক ও লেপ-কম্বলের অভাবে। গ্রামের মানুষের মধ্যে শীত নিবারণে আগুন পোহানোর প্রচলন থাকলেও গরিবদের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি। আগুন পোহাতে গিয়ে শীত মৌসুমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা অহরহ ঘটে। রাজধানীতেও শীত মৌসুমে বস্তি এলাকায় প্রায়ই অগ্নিকাণ্ডের উদ্ভব হয় অসতর্কভাবে আগুন পোহাতে গিয়ে। এবারের শীতে রংপুর এলাকায় আগুন পোহাতে গিয়ে বিপুলসংখ্যক মানুষের অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। অগ্নিদগ্ধ হয়ে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের পরিবার-পরিজনকে এ শোক যেমন সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে; তেমনি যারা দগ্ধ হয়ে বেঁচে আছেন তাদের জীবনও কঠিন হয়ে উঠবে—চেহারার বিকৃতিসহ নানা সমস্যার কারণে। আগুন পোহাতে গিয়ে একের পর এক যে দুর্ঘটনা ঘটছে তা এড়াতে জনসচেতনতা সৃষ্টিই প্রকৃষ্ট পথ। এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার এবং সামাজিক সংগঠনগুলো অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। আগুন পোহানোর সময় যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই।  শীত নিবারণ কাঙ্ক্ষিত হলেও আগুন পোহাতে গিয়ে জানমাল যাতে ঝুঁকির মধ্যে না পড়ে, সেদিকে লক্ষ্য রাখা জরুরি।

সর্বশেষ খবর