মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

প্রশ্নপত্র ফাঁস

দোষী শিক্ষকরা যেন রক্ষা না পান

প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিরুদ্ধে ফাঁকা মাঠে তরবারি ঘুরিয়ে যে কোনো ফায়দা নেই দেরিতে হলেও তা সরকারের কর্তাব্যক্তিদের উপলব্ধিতে এসেছে। সংসদে সরকারদলীয় সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এই দুষ্কর্মের হোতাদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। বলেছেন, বার বার কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পরও কিছুসংখ্যক শিক্ষক প্রশ্নপত্র ফাঁসে সরাসরি জড়িত থাকায় এবার আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসে কোনো শিক্ষকের জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে তার  চাকরি থাকবে না। এমনকি সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র এবং ওই স্কুলের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দেওয়া হবে। শিক্ষামন্ত্রী সাম্প্রতিক প্রশ্নপত্র ফাঁসকে প্রযুক্তির উন্নয়নের সমস্যা হিসেবে অবহিত করেছেন। বলেছেন, আধুনিক প্রযুক্তির কারণে কিছু শিক্ষক মোবাইল ফোন বা অন্যান্য কিছু ব্যবহার করে পরীক্ষা শুরুর আগে প্রশ্নপত্র খুলে তা প্রচার করে একদিকে যেমন অর্থ রোজগার করছেন, অন্যদিকে সরকারকে বেকাদায় ফেলছেন। কিছুসংখ্যক শিক্ষক যারা আমাদের সম্মান নষ্ট করছে, সার্বিক সমস্যার সৃষ্টি করছে, আমরা একটা ব্যবস্থা নিলে তারা পাল্টা ব্যবস্থা নিচ্ছে। কঠোর অবস্থান নেওয়ার কারণে আশা করি এবার প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধ হবে। এখন থেকে কোনো ধরনের মোবাইল ফোন কেউ পরীক্ষা হলের আশপাশে নিতে পারবে না। সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে গিয়ে সিটে বসতে হবে, তারপর খাম খোলা হবে। এটা পর্যবেক্ষণের জন্য মোবাইল টিম গঠন করা হবে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিরুদ্ধে সরকারের এ কড়া পদক্ষেপ সময়োপযোগী সন্দেহ নেই। তবে এতে আসল বিপদ অর্থাৎ প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধ হবে কিনা তা বাস্তবায়ন পর্যায়ের সততা ও দক্ষতার ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। পরীক্ষা কেন্দ্রে বা ধারেকাছে মোবাইল ফোন ব্যবহার আগে থেকে নিষিদ্ধ থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি যথাযথ নজরদারির অভাবে। কোচিংবাণিজ্য বন্ধে বার বার হুঙ্কার দেওয়া হলেও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো আন্তরিকতার প্রকাশ ঘটেনি। প্রশ্নপত্র ফাঁস দেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য সমূহ সর্বনাশ ডেকে আনছে তা বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মধ্যে ফারাক থাকায়। আমরা আশা করব, মন্ত্রী এবার অন্তত কড়া হবেন। প্রশ্নপত্র ফাঁসের লজ্জা থেকে জাতিকে বাঁচাতে সাধ্যের সবকিছুই করবেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর