শুক্রবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

যানজটে আক্রান্ত রাজধানী

ট্রাফিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিন

যানজট রাজধানীবাসীর মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংসদেও এ নিয়ে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। যানজট নিরসনে সরকারের একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণ সত্ত্বেও রাজধানীতে পাল্লা দিয়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও যানবাহন বৃদ্ধি পাওয়ায় তার সুফল কতটা অর্জিত হবে, তা বড় মাপের প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। যানজটের কারণে রাজধানীতে দিনে ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। রাস্তার তুলনায় গাড়ির সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ায় তা বাড়তি চাপ সহ্য করতে পারছে না। রাজধানীর যানজট নিরসনে একের পর এক উদ্যোগ নেওয়া হলেও ট্রাফিক ব্যবস্থার বিশৃঙ্খলার কারণে পরিস্থিতির ইতিবাচক উন্নতি ঘটছে না। বাসচালক ও রিকশা চালকদের যথেচ্ছতায় যানবাহনের ভিড় কম থাকলেও যানজট এড়ানো কঠিন হয়ে পড়ে। আমরা এ কলামে বারবার বলেছি যানজটের লাগাম টানতে হলে ট্রাফিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় জোর দিতে হবে। যেখানে-সেখানে পার্কিংয়ের যথেচ্ছতা বন্ধে নিতে হবে উদ্যোগ। ফুটপাথ ও সড়ক দখল করে দোকানপাট খোলা কিংবা জিনিসপত্র রাখার প্রবণতা রুখতে হবে। যেখানে-সেখানে বাসে লোক উঠানোর বদভ্যাস বন্ধে নিতে হবে কড়া ব্যবস্থা। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির মহোৎসব বন্ধেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবতে হবে। প্রতিটি সড়কে অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচলে আলাদা লেন চালু এবং যেখানে-সেখানে রাস্তা পারাপার বন্ধেরও উদ্যোগ নেওয়া দরকার। প্রাইভেট কারের চাপ কমাতে রাজধানীতে মানসম্মত বাস চালুরও উদ্যোগ নিতে হবে। যানজটের কারণে প্রতিদিন যে বাড়তি জ্বালানি পোড়ে তা জাতীয় অর্থনীতির জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজধানীর যানজট বন্ধ হলে উৎপাদনশীলতায় তা যে অবদান রাখবে তাতে জাতীয় প্রবৃদ্ধি প্রতি বছরই ৭ শতাংশের বেশি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। মধ্যআয়ের দেশে পরিণত হওয়ার টার্গেট পূরণ সহজতর হয়ে দাঁড়াবে। এ জন্য মেট্রোরেল-পাতালরেল এবং ফ্লাইওভার নির্মাণের প্রাসঙ্গিকতা থাকলেও সবচেয়ে জোর দিতে হবে ট্রাফিক শৃঙ্খলাকে। এ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ না হলে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেও কোনো সুফল অর্জিত হবে না।  ট্রাফিক ব্যবস্থার বিশৃঙ্খলার কারণেই যানজট নিরসনে সরকারের গৃহীত ইতিবাচক পদক্ষেপগুলোর সুফল অর্জিত হচ্ছে না। রাজধানীর যানজট অবসানে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে সরকারকে আপসহীন হতে হবে।

সর্বশেষ খবর