বায়ুদূষণ মানুষের আয়ু কেড়ে নিচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের জন্য বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে বায়ুদূষণ। রাজধানী ঢাকা এশিয়ার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দূষিত বায়ুর শহরের তকমা লাভ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দুটি গবেষণা সংস্থার এক যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণে এশীয় শহরগুলোর শীর্ষে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। তার পরই বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা, পাকিস্তানের বৃহত্তম নগরী করাচি ও চীনের বেইজিংয়ের অবস্থান। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের মধ্যে বিশ্বে বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ভারত ও বাংলাদেশে। এ দূষণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বজুড়ে একযোগে প্রকাশিত ‘বৈশ্বিক বায়ু পরিস্থিতি ২০১৭’ শীর্ষক প্রতিবেদনে ঢাকাকে এশিয়ার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দূষিত বায়ুর শহর হিসেবে চিহ্নিত করার ঘটনাটি উদ্বেগের ও অস্বস্তির। নাগরিক সুযোগ-সুবিধার অপ্রতুলতার কারণে বিশ্বের যেসব নগরীকে বসবাসের অযোগ্য বলে ভাবা হয়, তার মধ্যে রয়েছে ঢাকার নাম। বায়ুদূষণের দিক থেকে বিপজ্জনক অবস্থা এই দুর্নামকে যে আরও পাকাপোক্ত করবে তাতে সন্দেহ নেই। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউট ও ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশনের যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুতে যেসব ক্ষতিকর উপাদান থাকে, তার মধ্যে মানবদেহের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক হচ্ছে পিএম ২.৫। চীন এ উপাদান সবচেয়ে বেশি নির্গত করত। ভারত গত দুই বছরে চীনকে টপকে দূষণকারী শীর্ষস্থানটি দখল করে নিয়েছে। চীন ও ভারতের পরই রয়েছে বাংলাদেশের অবস্থান। কম দূষিত শহরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে জাপানের টোকিও। কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বায়ুদূষণের পরিমাণ পরিমাপ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশে বছরে ১ লাখ ২২ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। বায়ুদূষণে শিশুমৃত্যু হারের দিক থেকে পাকিস্তানের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। রাজধানী ঢাকাসহ বাংলাদেশে বায়ুদূষণে সবচেয়ে ক্ষতিকর ভূমিকা রাখছে ইটভাটা, কলকারখানা ও যানবাহনের ধোঁয়া। শুষ্ক মৌসুমে এ ধোঁয়া ভয়াবহভাবে বায়ুদূষণের কারণ ঘটায়। রাজধানীর দেড় কোটিরও বেশি মানুষের জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে বায়ুদূষণ রোধে উদ্যোগ নিতে হবে।
সুদীপ্ত সুজন