শনিবার, ২০ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

মাদক আগ্রাসন

রাষ্ট্রকে কড়া ভূমিকা নিতে হবে

মাদককে বর্তমান সমাজের ব্যাধি হিসেবে অভিহিত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বলেছেন, দেশের ৭০ লাখ মাদকাসক্তকে সেবা দিয়ে মূলধারায় আনা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। মাদকের দাবানলে আর কোনো মস্তান ঐশীর মতো নিজের বাবা-মায়ের খুনি তৈরি হোক তা আমাদের কাম্য হওয়া উচিত নয়। বৃহস্পতিবার তেজগাঁওয়ে কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র ৫০ থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীতকরণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য তাত্পর্যের দাবিদার। মাদক আগ্রাসন দেশের যুবসমাজের ভবিষ্যত্ অন্ধকারাচ্ছন্ন করে তুলছে। ইয়াবাসহ মাদকের থাবা প্রতিহত করতে সরকারি উদ্যোগের দৃশ্যত অভাব না থাকলেও এ আগ্রাসন কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না। মাদক ব্যবসার সঙ্গে রাজনৈতিক সাইনবোর্ড ব্যবহারকারী ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের সম্পর্ক থাকায় তারা যা ইচ্ছা তাই করার সুযোগ পাচ্ছে। অভিযোগ করা হয়, ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার, চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে উপজেলা চেয়ারম্যান এমনকি কোনো কোনো সংসদ সদস্যের সঙ্গে রয়েছে মাদক ব্যবসার সম্পর্ক। আশির দশকে এ দেশে হেরোইনের আগ্রাসন ঘটে। ওই দশকের শেষ দিকে ফেনসিডিল মাদক রাজ্যের পরিচালিকাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়। নব্বই দশকের শেষ দিকে ইয়াবার আগমন ঘটে মাদকরাজ্যে। এখন ইয়াবার থাবায় আক্রান্ত দেশের প্রায় প্রতিটি এলাকা। রাজধানীর অভিজাত তরুণ-তরুণীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ইয়াবায় আসক্ত। এ নেশার অর্থ জোগাতে তারা জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধে। তরুণীদের কেউ কেউ দেহপসারিণী হয়ে জোগাচ্ছে মাদক কেনার অর্থ। মাদকের মধ্যে ভয়ঙ্কর বলে বিবেচিত ইয়াবা। এই মাদক নেশায় তাত্ক্ষণিকভাবে হূত্স্পন্দন, রক্তচাপ ও শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। মস্তিষ্কের কিছু কোষের অপমৃত্যু ঘটে। এভাবেই হূিপণ্ড, ফুসফুস ও কিডনি বিকলের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে ইয়াবায় আসক্তদের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাদকাসক্তদের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার বিষয়টিকে রাষ্ট্রের দায়িত্ব হিসেবে স্বীকার করে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা প্রশংসার দাবিদার।

এ বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে, মাদকাসক্ত বানাতে ভূমিকা রাখছে যে অপপ্রক্রিয়া  অর্থাত্ মাদক ব্যবসা তা দমনেও রাষ্ট্রকে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে।

সে ক্ষেত্রে ঘাটতি থাকায় মাদকের থাবা ভয়ঙ্করভাবে বিস্তৃত হচ্ছে। এ ব্যাপারে কোথায় কোথায় ঘাটতি আছে তা বের করে আঘাত হানা সরকারের দায়িত্ব বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর