সোমবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

রাজধানীর যানজট

সরকারকে আরও তৎপর হতে হবে

যানজট এখন রাজধানীর নাগরিক জীবনের সবচেয়ে বড় সমস্যা। প্রতিদিন নগরবাসীর ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা গিলে খাচ্ছে যানজট নামের ভয়ঙ্কর ভূত। জাতীয় অগ্রগতির জন্যও তা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যানজট নিরসনে সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ সত্ত্বেও সুফল মিলছে না বাস্তবায়ন পর্যায়ের গাফিলতিতে। সংসদে এ নিয়ে ক্ষোভের প্রকাশ ঘটলেও প্রশাসন যেন অসহায়। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর ৩৭টি পয়েন্টে ২৪ কারণে হামেশা লেগে থাকছে যানজট। দুঃসহ এ জটে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ছে রাজধানী। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি সড়ক, মোড়, ট্রাফিক পয়েন্ট ও রেলক্রসিংয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকা মানুষজন সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। যানজট নেই রাজধানীতে এমন সড়ক খুঁজে পাওয়া কঠিন। কুড়িল বিশ্বরোড থেকে মালিবাগ রেলক্রসিং পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার সড়ক, শনিনআখড়া-যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার, গুলিস্তান-নবাবপুর-সদরঘাট পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার, শাহবাগ রূপসী বাংলা হোটেল মোড়-বাংলামোটর-সোনারগাঁও মোড় হয়ে ফার্মগেট পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার, নীলক্ষেত মোড়-নিউমার্কেট-কলাবাগান পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার, দক্ষিণ কমলাপুর-ধলপুর-সায়েদাবাদ ব্রিজ পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার, বনানী ক্রসিং-মহাখালী-নাবিস্কো বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার যানজটের দখলে থাকে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। ঢাকার ভয়াবহ যানজটের আরেকটি কারণ অভিজাত শ্রেণির দেড় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ঘিরে অর্ধলক্ষাধিক প্রাইভেট গাড়ির আনাগোনা। বিশেষজ্ঞদের মতে, তেজগাঁও সাতরাস্তা থেকে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত যে ১২টি সড়কমোড়ে সরাসরি রাইট টার্ন ক্রসিং রয়েছে, সেগুলো ইউলুপে পরিণত করা হলে ২৫ ভাগ যানজট কমে যাবে। রাজধানীর যানজট নিয়ে মাসব্যাপী জরিপ শেষে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরাসরি রাইট ক্রসিংগুলো ইউলুপে পরিণত করা হলে এবং রেলক্রসিংসমূহে ছোট ছোট ফুটওভার ব্রিজ বা আন্ডারপাস করা হলে ঢাকার যানজট অর্ধেকে নেমে আসবে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান না থাকায় সিটি করপোরেশন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না। বাড্ডায় ইউলুপ নির্মাণে যে দীর্ঘসূত্রতা চলছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত। রাজধানীর দেড় কোটি মানুষকে যানজটের ছোবল থেকে বাঁচাতে হলে এ ব্যাপারে সরকারকে আরও তৎপর হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর