সোমবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

কিশোর গ্যাং গ্রুপ

ওদের গডফাদারদের প্রতিও নজর দিন

চট্টগ্রাম মহানগরের আইনশৃঙ্খলায় সাক্ষাৎ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে শতাধিক কিশোর গ্যাং গ্রুপ। মহানগরের ১৬ থানা এলাকায় খুন, অপহরণ, মারধর— হেন অপরাধ নেই যা তারা করছে না। মাদকের সঙ্গেও রয়েছে কিশোর গ্যাং গ্রুপগুলোর সংশ্লিষ্টতা। গত মঙ্গলবার কলেজিয়েট স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র আদনান ইসফারের খুনের পর কিশোর গ্যাং গ্রুপগুলোর নাম উচ্চারিত হচ্ছে জোরেশোরে। দেরিতে হলেও পুলিশ প্রশাসন এই অপরাধী চক্রের সদস্যদের নামের তালিকা তৈরিতে নেমেছে। বন্দরনগরের প্রতিটি থানা পুলিশকে এ ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সিএমপির পক্ষ থেকে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম নগরের ১৬ থানা এলাকায় শতাধিক কিশোর গ্যাং গ্রুপ রয়েছে। এসব গ্রুপ গঠনে নেপথ্য ভূমিকা পালন করছেন ছাত্র সংগঠনের তথাকথিত নেতারা। কিশোর গ্যাং গ্রুপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে তাদের গডফাদাররা ফোন করে বসেন। তাই পুলিশ এত দিন গ্যাং গ্রুপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়ে সংশয়ে ভুগেছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের অশুভ উদ্দেশ্যে উত্থান হয়েছে এসব গ্যাং গ্রুপের। চট্টগ্রামে গ্যাং গ্রুপের শুরু জামালখানে। পরে তা নগরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিটি স্কুল ও কলেজে একাধিক গ্যাং গ্রুপ রয়েছে। খেলা কিংবা অন্যান্য বিষয়ে পান থেকে চুন খসলেই এরা নিজেদের মধ্যে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন ধরনের মাদক ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে। কিছু কিছু গ্রুপের বিরুদ্ধে ইভ টিজিং ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ আছে। সামান্য বিষয় নিয়েও গ্যাং গ্রুপগুলোর সদস্যরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। বোমাবাজিসহ নানা ধরনের সন্ত্রাসেও এরা পারদর্শী। চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলার জন্য কিশোর গ্যাং গ্রুপের তৎপরতা নিঃসন্দেহে উদ্বেগের। এর সঙ্গে তথাকথিত ছাত্র সংগঠনগুলোর সংশ্লিষ্টতাও দুর্ভাগ্যজনক। স্কুলছাত্র আদনান ইসফারের হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ গ্যাং গ্রুপগুলোর তৎপরতা রোধে তালিকা তৈরির যে উদ্যোগ নিয়েছে তা প্রশংসার দাবিদার। তবে এ ধরনের ঘটনা শুধু চট্টগ্রামেই সীমাবদ্ধ নয়, রাজধানীসহ সারা দেশেই রয়েছে কিশোর গ্যাং গ্রুপের তৎপরতা। যাদের সঙ্গে রয়েছে অপরাজনীতির সংশ্লিষ্টতা। আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে সেসব ক্ষেত্রেও পুলিশকে নজর দিতে হবে।

তাদের গডফাদারদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর